সাম্প্রতিক শিরোনাম

বিসিএস এর চাকরি ছেড়ে গরীবের ডাক্তার “মনীষা”

৩৪তম বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হল। মনীষা চক্রবর্তী নিয়োগ পেলেন স্বাস্থ্য ক্যাডারে সার্জন হিসেবে। অন্য কোন পরিবার হলে আনন্দের বন্যা বয়ে যেত পরিবার–আত্মীয় স্বজন–এলাকায়। গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে নিশ্চিন্তে সরকারী কর্মকর্তা হয়ে সারাজীবন পার করে দিতে পারতেন।

কিন্তু মানুষটা মনীষা চক্রবর্তী। মনীষা এবং মনীষার পরিবার বিসিএস এর ফলাফলে আনন্দিত হলেও কোন বাধ ভাঙ্গা উচ্ছাসের লেশ মাত্র ছিল না। কেননা, মনীষা ততদিনে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তাতে তিনি অনড়। স্বাস্থ্য ক্যাডারে সার্জন হিসেবে যোগ দেবেন না । কিন্তু ডাক্তার হিসেবে গরীবদের সেবা দান অব্যাহত রাখবেন। বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে যাবেন তিনি সর্বস্তরের মানুষকে।

সাধারণত শ্রমজীবীরাই তার কাছে প্রাধাণ্য পায়। সবাই তার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। কিন্তু আজকালকার দিনে এই ত্যাগ আর প্রচলিত ব্যস্ত কিংবা ভোগবাদী বা বিলাসী জীবনের প্রতি এই নির্লিপ্ততা কিভাবে এল তার?

নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করার এই প্রেরণা মনীষা চক্রবর্তী তার মাত্র ৩০ বছরের জীবনে কোথা থেকে পেলেন?

বরিশালের মেয়ে মনীষা। বনেদী পরিবার হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মধ্যবিত্ত আবহে বেড়ে উঠেছেন। শিক্ষাজীবন শুরু করেন বরিশালের মল্লিকা কিন্ডারগার্টেনে । তিনি বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় থেকে সাথে এইচএসসি পাস করেন। বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন।

বাবা-দাদাকে ছোটবেলা থেকেই মানুষের সেবা করে আসতে দেখেছেন। বৃটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, মোটকথা মাতৃভূমির সব বড় আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তার পুর্বসূরীরা। মানুষের সেবা করার যে পারিবারিক ঐতিহ্য, তারই ধারাবাহিকতায় মনীষাও পথে নেমেছেন মানুষের সেবায়। বাবা আইনজীবী তপন চক্রবর্তী ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবীদ। তিনি বরিশাল প্রেস ক্লাবের একজন সিনিয়র সদস্যও।

মনীষা সারা দুনিয়ার সমাজবিপ্লবীদের আইকন ‘চে গুয়েভারার’ মতো নিজের ডাক্তারি পেশাকে জড়িয়েছেন সমাজবিপ্লবের মহান কাজে। মনীষা মনে করেন নিজের জীবনের অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটানোর চেয়ে ঐসব খেটে খাওয়া পিছিয়ে পড়া মানুষদের জীবন এর পরিবর্তণ ঘটানোর জন্য সময় দেয়া জরুরী। যেহেতু তিনি সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করতে চান, তাই সেটা শুরু করার এখনই ঠিক সময়।

তাই জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্তটাও নিয়ে নিলেন বিসিএস এর স্বাস্থ্য ক্যাডারে সার্জন হিসেবে যোগ না দিয়ে। এরপর তিনি আর ঘরে বসে না থেকে বস্তিতে, শহর ও গ্রাম গঞ্জে ক্যাম্প করে চিকিৎসা সেবা দিতে লাগলেন। এতে সাধারণ নিম্নবিত্ত শ্রমিরা অভূতপূর্ব সারা দেয়। ভাল মানের ডাক্তারের কাছ থেকে সময় ও পরামর্শ পেতে যে অর্থ খরচ করতে হয়, বেশিরভাগেরই সে সামর্থ্য নেই। মনীষার বিনামূল্যের আন্তরিক মনোযোগ ও যত্নের সেবা তাই তাদের কাছে অমূল্য। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও বস্তির সাধারণ মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে ‘গরিবের ডাক্তার’ খেতাব পান তিনি।

মনীষা শুধু চিকিৎসা সেবাই নয়, নারীর প্রতি সহিংসতা, সবধরনের নিপীড়ন ও বৈষম্য, নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন এবং শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

জনসেবার এই আকাঙ্ক্ষা তাকে বরিশালের সিটি মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হতেও প্রেরণা যুগিয়েছে। মেয়রপ্রার্থী হিসেবে গিয়েছিলেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। একটি বড় সংখ্যক ভোটারের ভোটও গেছে তার ব্যালট বাক্সে। গত বছর বরিশালের সিটি মেয়র নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত না হলেও আলোচনায় এসেছিলেন ইতিবাচকভাবে এসব কাজের মাধ্যমে। মাটির ব্যাংকে শ্রমজীবী মানুষের চাঁদার অর্থে তিনি প্রচারণা চালিয়েছিলেন। শুধু রাজনীতিতেই নয় সমাজসেবায়ও তরুন এবং নারী হয়েও যেভাবে তিনি অকুন্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এখন, তা যে কারও জন্য অনুসরনীয় হতে পারে। দেশের জন্য এখন এমন বিকল্প ও তারুন্য নির্ভর সমাজ সেবকই দরকার।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...