খাচ্ছি দাচ্ছি দিব্যি ঘুমাচ্চি, দেশ বিদেশে আসছি যাচ্ছি,
বলা নেই কওয়া নেই কোথা থেকে যে করোনা ঢুকে গেল!
জানেন, এসবই জনাবের জন্য?
হৈ হৈ পড়তেই আমরা বললাম – আহা আমাদের বাছাদের কী হবে?
রিয়াদ,মুন্না, জহির,ইনা,সীমা প্রতিদিন এক সাথে স্কুল করছে-স্কুল বন্ধ করুন।
জনাব স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ করলেন।
এই সুবাদে বিদেশ থেকে আসা শ্যালককে সাথে নিয়ে স্কুলের ছুটিটা কাজে লাগাতে আমরা পতেঙ্গা কক্সবাজার, টেকনাফ সবখানে দৌড়ঝাঁপ করলাম — শুধু সুন্দরবনটাই বাদ পড়ে গেল।
বিমান বন্দরে মানুষের আসার ভিড় বাড়তে লাগলো।
জনাব বললো, যে-যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন. প্রয়োজন ছাড়া কেউ বিদেশ থেকে আসবেন না। কেউ আসবেন না ভেবে জনাব গা এলিয়ে বসলেন একটু।
আমরা বললাম,বললেই হলো! মাবাবা,প্রিয়তমাকে দেখতে আসবোই। আমরা ফাঁকে ফাঁকে ঝাঁকে ঝাঁকে এসে ভরে গেলাম।
জনাব বললো, এসেছোই যখন, ঘরে থাকো, বের হবে না ১৪ দিন।
আমাদের মা-বাবা বললো, সে কি কথা! কত দিন পর বাছা আমার এলো— আয় বাবা আমার বুকে আয়— বলে সিনেমার মত জড়িয়ে ধরে আদর করা হলো।
পাড়া পড়শি পর্যন্ত রান্না করা তরকারি নিজ হাতে খাইয়ে দিয়ে গেল।
মটরসাইকেলের পিছনে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরে প্রিয়তমাকে পনের মাস না দেখার সাধ মিটানো হলো।
এবার আমরা বললাম, অনেক হয়েছে, ফ্লাইট বন্ধ করুন–
জনাব তাই করলো!
সেই ফাঁকে আমরা চারচাকার গাড়িটায় বিদেশ থেকে আসা ভাইবন্ধুকে নিয়ে ঠিকই ঘুরলাম হোটেল,সিনেমা, বিয়েবাড়ি -যত্রতত্র।
জনাব বললো – এভাবে ঘুরছেন কেন ?
একদম একা, একা মানে আলাদা, আলদা মানে পৃথক ঘরে থাকুন—
পাড়া প্রতিবেশি ময়মুরুব্বী হা হা করে হেসে উঠলো, এসব বোলোনা, আমাদের দেশে করোনা–কিচ্ছু করবে না, ওটা ঐসব দেশের জন্য- বলে সব কিছূ সৃষ্টিকর্তার উপর চাপিয়ে আমরা দিব্যি বাজারে গেলাম, বিয়ে থা করলাম, বাহিরে ইচ্ছে মতো খেলাম আর মহাশয়ের ফরটিন জেনারেশন উদ্ধার করতে থাকলাম।
এই সুবাদে আমরা সারা দেশে কেউ কেউ বিখ্যাতও হয়ে গেলাম।
আমরা বললাম, চেনা পরিচিত লোকগুলো প্রতিদিন একসঙ্গে অফিস করছি,বাজার ঘাট করছি -এটা বন্ধ হওয়া দরকার।
জনাব সব অফিস- আদালত- বাজারঘাট বন্ধ করে দিলেন।
তারপর আমাদের যত সামর্থ আছে, তারও থেকে বেশি চাল-ডাল-তেল- পেঁয়াজ কিনে বাজার প্রায় ফাঁকা করে রান্নাঘর, বসার ঘর পর্যন্ত খাদ্যগুদাম বানিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীদের হাত সমৃদ্ধ করতে লাগলাম আর এই ফাঁকে মহাশয় কিছু একান্ত মানুষ মহাশয়ের মাথায় দামি দামি তেল মাখবার উপক্রম হলো।
ওদিকে আমরা বলা শুরু করলাম লক ডাউন করুন লক ডাউন করুন- একটু দেরিতে হলেও জনাব প্রায় তাই করলো
সেই সাথে আমাদের ভদ্র রাখার উদ্দেশ্যে দিয়ে দিলো সুশৃঙ্খলবাহিনী।
জনাব বলতেই থাকলো, একে অন্যের থেকে কমপক্ষে ১ মিটার দৃরত্ব রাখুন, সামাজিক দূরত্ব বাড়ান, ঘরে থাকুন।
আমরা সেই কথা বুঝে বা না বুঝে মুখে মাস্ক পড়ে করোনাকে করুণা দেখিয়ে অন্য অপরিচিত লোকজনের সাথে গাদাগাদি, ঠেলাঠেলি করে একটি, দুটি, চারটি পর্যন্ত টিকেটে কিনে ট্রেন বাস-ষ্টিমারে- কর্মস্থলে থাকার ছুটিটাকে, ঈদের ছুটি বানিয়ে,
ছুটলাম– নিজ গাঁয়ের দিকে— সামাজিক দূরত্ব ঘোঁচাবার জন্য
মনে মনে বললাম,
আহারে কতদিন ছেলেবেলার বন্ধুদের সাথে চায়ের আড্ডাটা হয় না!
জনাব বললো, যে যেখানে আছেন ঘরে থাকুন, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোবেন, বাসা বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন,
নিজ ঘর থেকে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুন। আমরা বললাম,
সেকি কথা! এক সাথে না ডাকলে কি সৃষ্টিকর্তা সাড়া দেন?!
আমরা ৩ লক্ষ মানুষের গণমোনাজাতে জমায়েত হলাম,
একে অন্যের সাথে গাদাগাদি করে কেঁদে ভাসালাম বুক–
হে সৃষ্টিকর্তা এ বিপদ থেকে আমাদের তুমি রক্ষা করো !
কিন্তু তারপরও করোনা এমন করছে কেন?
সব বোঝার ভান করে, মাথা দুলিয়ে বলতে শুরু করলাম-
হবেই তো- ঐ যে- সব দোষ জনাবের।
এবার কে যেন ভেতর থেকে খিলখিল করে হেসে উঠে বললো,
ঠিক বলেছো,সব দোষেনই তো জনাবের!
কারণ ঐ সাহেব ঠিক হলেই হবে, আমার ঠিক হবার দরকার নেই
সব সমস্যা সাহেবের , কারণ সমস্যা তৈরি করবো আমি আর সাহেব করবে তার সমাধান।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাস্ক,গ্লাভসের নোংরা শহর জনাবের জন্যই– কেননা আমি আমার ঘর পরিষ্কার করবো
অন্যের সীমানায় যা খুশি ফেলে আর
পরিষ্কার করার জন্য আছে শুধু জনাব।
সব পরিবতর্নের ভার যে জনাবের, কেননা শুধু পরিবর্তন হবে তুমি আর আমি থাকবো এভাবেই।
সব দায়িত্ব জনাবের, যেহেতু যা করার করবে তুমি,
আমি বসে থাকবো অনড়
সব চিন্তা জনাবের,কেননা টকশো-এ বসে দু:শ্চিন্তা করে মাথা দোলাবো আমি, যা করার শুধু তুমি।
এসব শুনতে শুনতে দূরে অনেক দূরে, দৃষ্টির অনেক উপর থেকে
কে যেন আর্তনাদ করে বলে বললো-
দয়া করে নিজেকে পরিবর্তন করুন, পরিবর্তন হয়ে যাবে সব কিছু–
চারদিকে শব্দগুলো গুঞ্জরিত হতে থাকলো –নিজেকে পরিবর্তন করলে, পরিবর্তন হয়ে যাবে সব কিছু —
সেই শব্দ শুনে আমরা নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া চাওয়ি করে বললাম,
কী বলেছিলাম না সব দোয় মহাশয়ের
কথাটা নিশ্চয়ই আমাকে নয়, মহাশয়কেই বলেছে তাই না?–তাই? না?
লেখকঃ মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment