সাবিনা অযথা অনেকগুলো কুৎসায় জড়িয়ে গ্যালো। সে খুবই ভালো একটা মেয়ে।
ঠিক লক্ষী বলা যাবে কিনা নিশ্চিত না, তবে সে বেশ সুন্দরী, লোকে বলে সুন্দরী মেয়েরা লেখাপড়ায় ভালো হয় না, সাবিনা গড়পড়তা থেকে অনেক বেশী ভালো, তার উপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। যারা সুন্দরী আর পড়ায় ভালো তারা সাধারণত আর কিছুতে ভালো হয় না কিন্তু সাবিনা সাধারণ নয়, সে সুন্দরী, আচরণ বোঝে, ভালো গান গায়, নাচতে পারে, তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশল জানে, রান্নায় পটীয়সী, ঘর গোছানোয় রুচিশীল আর স্বভাবে? আযরা জাবিন!
কলকাতায় মার্কি স্ট্রীটে হেওয়ার্ডস ৫০০০এর বিয়ারের আসর, পড়ন্ত দুপুরে দরজা খুলে ঢুকতে যেতেই নেপালী চৌকিদার পথ আটকালো। গত তিনদিন ধরে আমরা কলকাতার অলিতে গলিতে ঘুরছি, আত্মীয়স্বজনের বাসায়, কেনাকাটা, চলচিত্র আর ভ্রমণ, কোথাও কেউ পথ আটকায়নি। কিন্তু নেপালীটাকেও দোষ দিতে পারছিনা, হেওয়ার্ডস ৫০০০এ শুধু মদ্যপানই চলে তা না, কিন্নরী কন্ঠের রমনীরা মঞ্চে উঠে সরাসরি গান শোনান, পুরো আসর জুড়ে থাকে আধো আলো, চামচ আর পেয়ালার টুংটাং… সে এক অন্যজগৎ!
ভদ্রমেয়েরা এখানে একেবারেই যে আসেন না তা নয়, তবে আপাদমস্তক বোরকা আর মুখে নেকাব আবৃত কাউকে ভিতরে ঢুকতে আমাদের বাহাদুর চৌকিদারটি সম্ভবত এই প্রথম দেখছে। তাঁর হাতে ছোট একটা বকশিস ধরিয়ে দিয়ে বল্লাম- “She belongs to me!” ইচ্ছে করেই ওভাবে বলা, বাহাদুর কি বুঝলো কে জানে, তবে দরজা সটান খুলে একটা সালাম দিয়ে পাশে সরে দাঁড়ালো। সাবিনা আমার দিকে ক্যামন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সোজা ভিতরে ঢুকে গ্যালো। একবার ফিরে তাকালোও না!
অতিধার্মিক মেয়েরা য্যামন করে, রাস্তায় নেকাব পরলেও ঘরের মধ্যে খুলে ফ্যালে। বিয়ার আড্ডার আধো আলোয় সাবিনার চেহারা থেকে য্যানো জোৎস্না বইছে। আশেপাশের চৌপায়াগুলোতে টের পেলাম কথাবার্তা কমই হচ্ছে, সবাই আড়চোখে অথবা সরাসরিই সাবিনাকে পরখ করছে।
তুফানটির অবশ্য সেদিকে কোন খেয়াল নেই, ঝড়ের কেন্দ্রে য্যামন সবসময় শান্ত থাকে, সেও তেমনি চুপচাপ আমার কাঁধে মাথাটা এলিয়ে রেখে গান শুনছে, আর মাঝে মাঝে ফিসফিস করে কিছু বলছে।
এতো গুলো বছর স্বত্বেও মাঝেমাঝে সন্দেহ হয়। সাবিনা আর আমার মধ্যে কোন প্রেম আছে কিনা জানিনা, কখনো ছিলো কিনা তাও বুঝতে পারিনা। তবে আমি ওকে প্রচন্ড ভালোবাসি। কতোটা? তা বলতে পারবোনা!
এই মুহুর্তে সে বিয়ারের পাত্রে হালকা হালকা চুমুক দিচ্ছে আর আমার কাঁধে মাথা রাখার বাহানায় আমার সিগারেট থেকেই চুপি চুপি টান দিচ্ছে। সে অত্যন্ত মাঁর্জিত মেয়ে, সবার সামনে বসে সিগারেট ফুঁকতে থাকলে লোকে কি ভাববে? সে জ্ঞান তার আছে, তার ধারণা এভাবে চুপিচুপি টানলে কেউ টেরও পাবেনা যে কি হচ্ছে।
অস্ফুটস্বরে আমার কানে কানে কি য্যানো বললো, খুব আপন লাগে যখন ও এমনটা করে কিন্তু একটা কথা ওকে আজপর্যন্ত বলা হয়নি যে বেশীরভাগ সময়ে আমি আসলে বুঝতেই পারিনা যে ও কি বলছে। তাতে কোন সমস্যা নেই, সঠিক জবাবটা আমার জানা আছে, আমিও ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ধীরে ধীরে বললাম-. I love you!
ও ঝট করে সোজা হয়ে বসে কড়া চোখে আমার দিকে তাকালো, বুঝতেই পারছি- গলদ জবাব! একটা ধমক লাগিয়ে জানতে চাইলো-
“বিয়ে করছো কবে?”
-তুমি বললে আজই।
“বলছিইতো, করো।”
আমি একটু ইতস্ততঃ করে বললাম- মানে দেশে ফিরেই সবার আগে।
“হুম জানা আছে, আমার বাবা কোনদিনও রাজি হবে না,” কথাটা সত্য।
-ওরা আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না।
“কিভাবে?”
-দরকার হলে তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো।
“কোথায় যাবে?”
-জানিনা। কিন্তু এমন কোথাও যেখানে কেউ আমাদের খুঁজে পাবেনা।
“হুম্ হয়েছে, শুধু বড় বড় কথা।”
আমি এক পলক থেমে ওর চোখে চোখ রেখে বললাম- আমার ব্জীবনে শুধু যদি তুমি না থাকো সাবিনা, তাহলে আর কোন কিছুরই কোন অর্থ নেই। বিশ্বাস রাখো। কিভাবে, কখন করবো জানিনা কিন্তু তোমাকে আমার থেকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবেনা।
“হুম্ কথায় কথায় শুধু চলচিত্রের সংলাপ,” বলে আবার আমার কাঁধে মাথা রাখলো সাবিনা, মনে হয় ঝড় শান্ত হয়ে আবারও ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
মঞ্চে গায়িকাদের পালাবদল চলছে, আমাদের চৌপায়াটা মঞ্চের একদম সামনে। লাল পুরূতপনা পরিহিতা এক মেয়ে মঞ্চে উঠে আমার দিকে সরাসরি তাকালো, তারপর দুহাতে শব্দচোঙটা ধরে চোখে চোখ রেখে গান ধরলো-
“আপকে প্যায়ার মে, হাম সাবারনে লাগে, দেখকে আপকো, হাম নিখারনে লাগে…”
রায ছায়াছবির আমার অসম্ভব প্রিয় একটা গান কিন্তু বোধহয় এটাই যথার্থ সময় নয়, আমি সাবিনাকে মৃদু স্বরে বললাম, মেয়েটাতো মনে হচ্ছে আমার দিকে তাকিয়েই গাচ্ছে, একটা গরগর কন্ঠে জবাব এলো “তাইতো দেখছি! চলো ওঠো এখান থেকে।”
-চল মানে? আরে আমরা প্রথম সারিতে বসে আছি না? তাই হয়তো অনুপ্রেরণার জন্য যে কোন একজনের দিকে তাকাচ্ছে।
“হয়েছে তোমার আর অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ নেই। ওঠো!”
-সাবিনা, আমি অনেকটা বিয়ার নিয়েছি, হুট করে উঠতে গ্যালে সমস্যা, আর একটু বসি?
“তুমি উঠবে কিনা বল?”
সাবিনার গনগনে চোখদুটোর দিকে তাকালাম, রাগলে ওকে আশ্চর্য সুন্দর লাগে, এই মেয়েটার কথার অবাধ্য হওয়া সম্ভব না।
পড়ে রইলো অসমাপ্ত বিয়ারের কাচকুপী আর পেয়ালা, মঞ্চে তখনো গান চলছে- ইস্ কাদর আপসে হামকো মুহাব্বত হুয়ী…
খুব মন চাইলো একবার ফিরে চাইতে কিন্তু সাবিনার পানে চেয়ে ওরদিকে হাত বাড়ালাম, অনেক সময় ফিরিয়ে দ্যায় কিন্তু এবার নিজেই শক্ত করে চেপে ধরলো। মুখটা তখনো রাগে কিছুটা দৃঢ় হয়ে আছে, মার্কি স্ট্রীটের নোঙরা পায়েচলা পথ আর টঙ দোকানের সারি পার করে ও আমাকে টেনে নিয়ে চললো তখনো অজানা এক ভবিতব্যের দিকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment