শতাব্দীর ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো রোগী শনাক্ত হয়েছে ১১৬৫ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৭৫১ জন। মৃত্যু হয়েছে আরো ২১ জনের সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ৫২২ জন।
আজ ২৬ মে মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন,গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৪০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আর নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৪ হাজার ৪১৬টি। এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪১টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ১৬৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৭৫১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫২২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৪৫ জন কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৯ জন।
এদিকে বিশ্বে করোনায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে প্রায় ৫৫ লাখ। এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ২১৮ জন মানুষের। তবে আশার কথা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে এরই মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৯ জন মানুষ। এবং দিন দিন এর সংখ্যা বাড়ছে।
প্রতিষ্ঠানটির দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, করোনায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৫৭ জন, জার্মানিতে ১ লাখ ৬১ হাজার ১৯৯ জন, ব্রাজিলে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৩৩ জন , স্পেনে ১ লাখ ৫০ হাজার ৩৭৬ জন, ইতালিতে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৮১ জন, তুরস্কে ১ লাখ ২০ হাজার ১০৫ জন, রাশিয়ায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ জন, ইরানে ১ লাখ ৭ হাজার ৭১৩ জন ও করোনার উৎপত্তিস্থল চীনে ৭৯ হাজার ৩৫২ জন। এদিকে আক্রান্তের দিক থেকে ইতালি, স্পেন, চীনকে পেছনে ফেলে বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১৬ লাখ ৬২ হাজার ২৫০ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে ভাইরাসে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৮ হাজার ২১৮ জন। এছাড়া মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে বর্তমান বিশ্বে প্রথমে আছে যুক্তরাজ্যের নাম। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৯৬ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৬২ হাজার ৫৪৭ জন। ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮৯৮, প্রাণহানি হয়েছে ২৩ হাজার ৪৭৩ জনের। স্পেনে করোনায় আক্রান্ত ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪০০, মৃতের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৮৩৪। রাশিয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪২৭ জন। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ৬৩৩ জন। এছাড়া ইতালিতে আক্রান্ত ২ লাখ ৩০ হাজার ১৫৮, মৃত্যু হয়েছে ৩২ হাজার ৮৭৭ জনের। ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ২৮ হাজার ৪৬০ জন।
জার্মানিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৬শ জন। এখন প্রাণহানি হয়েছে ৮ হাজার ৩০৭ জনের। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫০ জন মানুষের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ হাজার ১৭২ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬০ হাজার ৭০৬ জন মানুষ। এছাড়াও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৫৮৫। এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে ৫০১ জনের প্রাণহানি হলো। আর মোট ৭ হাজার ৩৩৪ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে একটি সামুদ্রিক বাজার থেকে করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তা চীনের সীমান্ত পেরিয়ে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম হয়ে অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন এই ভাইরাসে মূলত ফুসফুসে বড় ধরনের সংক্রমণ ঘটায়। জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ।