সাম্প্রতিক শিরোনাম

বিশ্বে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ২য় স্থানে

সারা বিশ্বে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে তা ৯ শতাংশ। আর তাতেই দখল করে নিয়েছে বিশ্বে মাছ উৎপাদনে ২য় স্থান। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছেন।

করোনাকালে দেশের জন্য সুখবর বয়ে নিয়ে এল মাছ। ২০১৯ সালে বিশ্বে মাছের উৎপাদন সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে। স্বাদুপানির মাছে বাংলাদেশ তার তৃতীয় স্থানটি ধরে রেখে উৎপাদন বাড়ানোর হারে দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে। চাষের মাছে দেশ গত ছয় বছরের মতোই পঞ্চম হয়েছে।

এত সব সুখবর দিয়েছে মৎস্যসম্পদ বিষয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বৈশ্বিক প্রতিবেদন দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার–২০২০। এটা প্রকাশিত হয়েছে ৮ জুন। প্রতিবেদনটি বলছে, গত বছর বিশ্বে প্রায় ১৮ কোটি টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। এর অর্ধেকেরও বেশি অভ্যন্তরীণ উৎসের তথা স্বাদুপানির মাছ। বাকিটা সামুদ্রিক মাছ।

২০১৮ সালে প্রকাশিত গতবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালেই স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এক লাফে পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠেছিল। এবার প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছে যথাক্রমে চীন ও ভারত। চাষের মাছে বাংলাদেশের অবস্থানটি চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের পরে।

স্বাদুপানির মাছ বাড়ার হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় হয়েছে। এক নম্বরে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সে দেশে মাছ উৎপাদন বাড়ার হার ১২ শতাংশ, আর বাংলাদেশে এর হার ৯ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে বিশ্বে এ হার প্রায় ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় ছিল, উৎপাদন বাড়ার হারে দ্বিতীয় হয়েছে। কৃতিত্ব ইলিশের আর দেশি মাছ চাষের। বাংলাদেশের মৎস্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনের হার মূলত বেড়েছে ইলিশের সৌজন্যে। গত এক যুগে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে জাতীয় মাছটির উৎপাদন এখন পাঁচ লাখ টন ছাড়িয়েছে। ইলিশে এ দেশ বিশ্বে এক নম্বর। মোট ইলিশের ৮০ শতাংশই এখানে উৎপাদিত হয়।

বিশেষজ্ঞরা আরও কৃতিত্ব দিচ্ছেন, দেশের বিজ্ঞানীদের দেশি মাছের চাষোপযোগী উন্নত জাত উদ্ভাবনকে। এফএও এবং ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) একাধিক প্রতিবেদনও বলছে, বাংলাদেশে পুকুরে মাছ চাষে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম একটি জাতীয় দৈনিকে বলেন, গবেষণা করে বিজ্ঞানীদের পরামর্শে সরকার ইলিশ রক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। গত চার বছরে উৎপাদন প্রায় দুই লাখ টন বেড়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানীরা বিলুপ্তপ্রায় মাছের আধুনিক চাষপদ্ধতি উদ্ভাবন করছেন। সামনে আমরা সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে গুরুত্ব দেব। আশা করি, এতে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন আরও বাড়বে।’

এফএওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্বে লোনাপানির মাছসহ সব ধরনের মাছের উৎপাদন বেড়েছে ১৪ শতাংশ। চাষের মাসের ক্ষেত্রে এটা বেড়েছে ৫২৭ শতাংশ। বিশ্বজুড়ে মানুষের মাছ খাওয়া বেড়েছে ১২২ শতাংশ।

তবে প্রতিবেদনে একটি আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে। মাছের উৎপাদন বাড়ছে বটে, কিন্তু মাছের মোট মজুত কমে আসছে। বিশ্বে প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় পর্যাপ্ত মাছ নেই। যতটা থাকতে পারত, ১৯৯০ সালে ছিল তার ৯০ শতাংশ। ২০১৮ সালে সেটা ৬৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত রুই, কাতলা, কই, তেলাপিয়া, কালবাউশ ও সরপুঁটির উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন। দেশের পুকুরে যত মাছ চাষ হচ্ছে, তার অর্ধেকেরও বেশি এসব জাতের। তাঁরা দেশের বিলুপ্তপ্রায় ২২টি প্রজাতির মাছের চাষপদ্ধতিও উদ্ভাবন করেছেন। সে তালিকায় টেংরা, পাবদা ও মলার মতো পুষ্টিকর মাছগুলো রয়েছে।

এফএওর প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ছয়টি দেশে মোট প্রাণিজ আমিষের চাহিদার অর্ধেকের বেশি মেটায় মাছ। গত এক যুগে বিশ্বে মাছ আহরণকারী ও নৌকার সংখ্যা প্রায় আড়াই শতাংশ কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তা বাড়ছে।

গত বছর ইফপ্রির একটি প্রতিবেদন বলেছিল, বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ মাছ আসছে পুকুর থেকে। পুকুরে মাছ চাষের কারণে গত তিন দশকে মোট উৎপাদন বেড়েছে ছয় গুণ। মাছ চাষ ও ব্যবসায় দুই কোটির কাছাকাছি মানুষ যুক্ত আছেন। ১৯৯০ সালে মানুষ মাথাপিছু বছরে সাড়ে সাত কেজি মাছ খেত। এখন সেটা ৩০ কেজিতে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, , নদী ও অন্যান্য জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ আছে। সমুদ্রসীমা বাড়ার পর বঙ্গোপসাগরে আহরণের সুযোগও বেড়েছে। এগুলো কাজে লাগাতে পারলে দেশ মাছ উৎপাদনে আরও এগিয়ে যাবে।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...