বিভাগ জাতীয়

ইরান-মার্কিন উত্তেজনায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক ধাক্কার আশঙ্কা প্রধানমন্ত্রীর

সাম্প্রতিক সংবাদ
তানভীর হাসান
Sponsored

বর্তমান সরকারের এক বছরে মন্ত্রিসভার সদস্যদের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের এক বছর পূর্তি শেষে নতুন বছরের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি অতীতে মন্ত্রীদের সাফল্য স্মরণ রেখে আরও ভালোভাবে কাজ করার তাগিদ দেন। অতীতের ভুল থেকেও শিক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

পাশাপাশি তিনি ইরান-মার্কিন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক ধাক্কার আশঙ্কা করেছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য ব্যাংকার’ আ হ ম মুস্তফা কামালকে বিশ্বের সেরা অর্থমন্ত্রী নির্বাচিত করায় অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ অর্জন কোনো ব্যক্তির নয়। এটি গত ১১ বছরের সরকারের অর্জন।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য যুগান্তরকে এমন তথ্য জানান।

একাধিক মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে কয়েকজন মন্ত্রী যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধপরিস্থিতির প্রভাবে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে দেশেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লাগবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এতটা এগিয়েছে, যে কোনো মুহূর্তে অর্থনীতির চাপের বহির্প্রকাশ হতে পারে। এটি উদ্বেগের। আমরা উৎকণ্ঠিত। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে একজন মন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এক বছরেই যা দেখালেন, আগামী ৪ বছর তো পড়েই রয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রীর এ অর্জন এক বছরের নয়, ১১ বছরের। এটি কারও ব্যক্তিগত অর্জন নয়। এর দাবিদার আগের অর্থমন্ত্রীসহ সচিবরাও। এর সঙ্গে যারা কাজ করেছেন, তাদের সবাই এই সাফল্যের দাবিদার। আগের অর্থমন্ত্রীর প্রতিও আমাদের কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত।

১ মার্চ বীমা দিবস: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বীমা কোম্পানিতে যোগদানের তারিখ প্রতিবছর ১ মার্চ ‘বীমা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা এবং দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বুধবার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বীমা খাত দেশের সম্ভাবনাময় গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক খাত। বীমার ব্যাপ্তি বৃদ্ধি এবং জনমনে বীমার ইতিবাচক ধারণা তৈরিতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন- বীমা মেলা, দেশব্যাপী বীমা সম্পর্কে সভা-সেমিনার, শোভাযাত্রা, বীমা দাবি পরিশোধের আয়োজন।

‘জাতীয় বীমা নীতি-২০১৪’তে জাতীয় বীমা দিবসের কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস পালনের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুরোধ করা হয়, এই জন্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার পর দেশীয় বীমা শিল্প সৃষ্টি হয় এবং ‘বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ন্যাশনালাইজেশন অর্ডার-১৯৭২’, দ্য ইন্স্যুরেন্স কো-অপারেশন অ্যাক্ট-১৯৭৩’ এর মতো বীমা সংশ্লিষ্ট মৌলিক আইন প্রণীত হয়।

বঙ্গবন্ধু ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্সে যোগ দিয়েছিলেন। এতদিন ১ মার্চ ভোটার দিবস পালন করা হলেও মন্ত্রিসভার বৈঠকে তা ২ মার্চে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ভোটার দিবস ২ মার্চ : বৈঠকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় বৃদ্ধি করে একটি ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) আইন-২০১৯’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দাকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ভোটার তালিকা আইন-২০০৯’ এর ১১ উপধারার বিধান অনুযায়ী কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত বিদ্যমান ভোটার তালিকা প্রতিবছর ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হালনাগাদ করার বিধান রয়েছে। এটাকে ২ জানুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত করার প্রস্তাব এসেছে। মন্ত্রিসভা এটা অনুমোদন করেছে এবং ২ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস হিসেবে পালনের নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

কৃষি যন্ত্রপাতি আনা যাবে সমবায় ভিত্তিতে : কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্র কেনার সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি সহজ শর্ত ও ন্যূনতম সুদ বা সুদবিহীন ঋণ দিতে একটি নীতিমালা করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কৃষিযন্ত্র কিনতে কৃষকদের ঋণ সুবিধা দেয়ার বিধান রেখে ‘জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০২০’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এটি কার্যকর হলে দেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের পরিধি আরও সম্প্রসারিত হবে এবং শ্রমিকের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। এর আওতায় কৃষকরা কৃষিযন্ত্র কেনার সুযোগ ও সহজ শর্তে ন্যূনতম সুদ বা সুদবিহীন ঋণ সুবিধা পাবেন। ফলে শ্রমিকের অপ্রতুলতা মোকাবেলা করে কৃষি উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পাবে, ফসলের অপচয় রোধ হবে, শ্রমিক খরচ কম হওয়ার ফলে উৎপাদন খরচ কমে আসবে, কৃষকরা লাভবান হবেন এবং দেশের যুবসমাজ কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ হবে। অপরপক্ষে বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থারও প্রসার হবে।

Sponsored
Leave a Comment

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…

January 12, 2024

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…

January 10, 2024

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…

January 7, 2024

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার…

January 6, 2024

এমনটা কেনো করলেন এ. আর রহমান?

হিরো আলম রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়ার পর সারা দেশে হইচই শুরু হয়ে যায়। এমনকি ওই প্রতিবাদের…

November 12, 2023

ন্যানোমিটার সেমিকন্ডাক্টর বা চীপ তৈরিতে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছে চীন

বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সেমিকন্ডাক্টর চিপ নিয়ে বড় ধরনের যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে রেড জায়ান্ট চীন।…

September 25, 2023
Sponsored