করোনার দুর্দিনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে অবশেষে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টানা ছয় মাসের বকেয়া উপবৃত্তির অর্থ হাতে পেতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে এ অর্থ ছাড়ের আদেশ হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ের ছয় মাসের উপবৃত্তি পাবে প্রাথমিকের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী। উপবৃত্তির টাকার অঙ্কও বেড়েছে সংশোধনী প্রস্তাবে। তাছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের এককালীন এক হাজার কোটি টাকা করে দেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়) পরিচালক যুগ্মসচিব মো. ইউসুফ আলী মঙ্গলবার এ কথা জানিয়ে সারাদেশের সব উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে পত্র দিয়েছেন। এতে তিনি আগামী ১৪ মে’র মধ্যে উপবৃত্তির তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ বিতরণের জন্য সুবিধাভোগীর তালিকা রুপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের পোর্টালে আপলোডের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, সদাশয় সরকার রমজানের ঈদের আগেই উপবৃত্তির অর্থ সুবিধাভোগীদের মোবাইলে পাঠাতে চায়। ১৪ মে’র মধ্যে উপবৃত্তির সুবিধাভোগীর তালিকা রুপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের পোর্টালে আপলোডে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সব শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা ও তাদের ঝরে পড়া রোধ করতে সরকার এই উপবৃত্তি চালু করেছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের সন্তানেরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেশি পড়ছে। করোনার কারণে দরিদ্র পরিবারগুলোতে এখন চলছে চরম আর্থিক টানাপড়েন। সরকার মনে করছে করোনার এই দুর্দিনে উপবৃত্তির যৎসামান্য টাকাটুকু হাতে পেলে তাদের কিছুটা হলেও উপকার হবে। দেশের ৬৬ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সবাই সরকারের দেওয়া উপবৃত্তি পেয়ে থাকে।
সাধারণ ছুটির কারণে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক স্থগিত থাকায় প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় সোমবার (৪ মে) বিশেষ বিবেচনায় প্রকল্পটিতে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৫ মে) এ সংক্রান্ত গভর্নমেন্ট অর্ডার (জিও) জারি করেছে পরিকল্পনা কমিশন। সংশোধনী প্রস্তাব অনুযায়ী বর্ধিত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।