করোনা সংকটময়কালে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) পাদূর্ভাব ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির (লকডাউন) প্রথম ৬৬ দিনে ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বেকার হয়েছেন। এর ফলে জিডিপির ২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি সভাপতি ড. আবুল বারকাত। এছাড়া লকডাউনে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের শ্রেণি কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে ২ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ হতদরিদ্র হয়েছেন। তবে অতি ধনীদের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ ৮ জুন সোমবার ‘করোনায় মহাবিপর্যয়ে থেকে মুক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
আবুল বারকাত বলেন, লকডাউনে সেবা খাতে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৬ কোটি, শিল্প খাতের ১ লাখ ২ হাজার ৪১ কোটি এবং কৃষি খাতে ২৬ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ সময় প্রত্যাশিত জিডিপির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ২৬ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৩৫ শতাংশ। আর ক্ষতি হয়েছে ৬৫ শতাংশ।
‘করোনার আগে দেশে মোট ৬ কোটি ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ছিল। চাকরির হারানোর মধ্যে সেবা খাতে চাকরি হারিয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ, শিল্প খাতের ৯৩ লাখ এবং কৃষি খাতের ১ কোটি ১৪ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অন্যদিকে উচ্চ মধ্যবিত্ত ও মধ্য-বিত্তদের মধ্যে থেকে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের আয় কমে দরিদ্র হয়ে গেছেন।’
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নিম্নআয়ের ৪৭ শতাংশ মানুষের জন্য এককালীন ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার প্রস্তাব করেন আবুল বারকাত।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি সভাপতি বলেন, গ্রাম পর্যায়সহ দেশের ৮২ ভাগ মানুষের কাছে করোনার সেবা পৌঁছায়নি। দায়সারা কাজ হয়েছে। এই মুহূর্তের জন্য প্রয়োজন ছিল শক্তিশালী স্বাস্থ্য সেবা। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য সেবা অত্যন্ত নাজুক। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে স্বাস্থ্য খাতের জন্য আগামী বাজেটে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের কথা জানিয়েছি।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে ভাইরাসটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩০ জনে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭৩৫ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৮ হাজার ৫০৪ জনে।