শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারি করেনার সংকটময় সময়ে ভার্চুয়াল আদালতে ৩৫ কার্যদিবসে এপর্যন্ত মোট ৬০৮ জন শিশুকে জামিন দিয়েছেন আদালত। জামিন পাওয়া ৫৮৩ শিশুদের ইতোমধ্যে সমাজসেবা অধিদফতর ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় তাদের অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
আজ ৪ জুলাই শনিবার সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার সাইফুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ২ জুলাই মোট ৩৫ কার্যদিবসে ভার্চুয়াল শুনানিতে মোট জামিনপ্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা ৬০৮। ৫৮৩ শিশুকে তাদের অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রের বরাতে বিএনএ জানান, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে যেসব শিশুকে আটক করা হয়, তাদের কারাগারে না রেখে দেশের তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। যাতে তারা কারাগারে বড়দের সঙ্গে মিশে নতুন নতুন অপরাধে জড়িত হয়ে না পড়ে, পেশাদার অপরাধী হয়ে না ওঠে সে জন্যই শিশুদের উপযোগী করে গড়ে তোলা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধের মামলায় আটক এসব শিশুকে সংশোধনের জন্য গাজীপুরের টঙ্গী ও কোনাবাড়ী এবং যশোরের পুলেরহাট এলাকায় পৃথক তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই তিনটি কেন্দ্রের মধ্যে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে মেয়েশিশুদের রাখা হয়। অপর দুটিতে ছেলেশিশুদের রাখা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৯ মে ভার্চুয়াল কোর্টে শুনানির জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হয়। পরের দিন ১০ মে উচ্চ আদালতের সব বিচারপতিকে নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে ফুলকোর্ট সভা করেন প্রধান বিচারপতি। ওই দিনই নিম্ন আদালতের ভার্চুয়াল কোর্টে শুধু জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এর পর থেকে নিম্ন আদালতে ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন শুনানি শুরু হয়। ১১ মে প্রথমবারের মতো কুমিল্লার আদালতে এক আসামির জামিন হয়।
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে গত ২৬ মার্চের পর দফায় দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ মে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
সরকার ৩০ মে মাসের পর সাধারণ ছুটি আর না বাড়ালেও আদালত অঙ্গনে নিয়মিত কার্যক্রমের পরিবর্তে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভার্চুয়াল বিচারকাজ অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।