মহামারীতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সরকার সহায়তা করেছে। আমার মনে হয় একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল বলে এইভাবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেছে এবং মানুষকে সহযোগিতা করেছে।
অন্য কোনো দল হলে এটা মোটেই করতো না বরং তারা দেখতো যে কীভাবে এখান থেকে কিছু ফায়দা লুটতে পারে কিনা। কিন্তু আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছি। এটা আমাদের নীতি, এটা আমাদের লক্ষ্য। এটা জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন। আমরা সেইভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকের শুরুতে এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে দলের সংসদীয় বোর্ডের সভার পর এই প্রথম দলের নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সভা গণভবনে অনুষ্ঠিত হলো।
সভায় সভাপতিমণ্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, দেশটা শুধু বর্তমান না, নতুন প্রজন্মের জন্য কীভাবে এগিয়ে যাবে, কীভাবে চলবে, সেটাই এখন থেকে প্রস্তুতি নিয়ে নির্দেশনা দিয়ে রাখব।
যেন যারাই ভবিষ্যতে আসুক তারাই এগিয়ে নিতে পারে। কারণ, আমাদের তো বয়স হয়ে গেছে। আমার তো ৭৪ বছর বয়স, আর কতদিন! সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস ছাড়াও বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে।কারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সেবা করাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা যদি অন্য দলগুলো দেখি তারা হয়ত শুধু ওই লিপ সার্ভিস। অর্থাৎ মুখে মুখে কথা বলেছে।
কিন্তু প্রকৃত মানুষের কাছে গিয়ে মানুষকে সাহায্য করা সেটা কিন্তু আমরা অন্যদল বা অন্য সংস্থা। অনেককেই আমরা দেখেছি তাদের উপস্থিতিটা ওভাবে দেখিনি। এবং ওই এনজিও-টেনজিও অনেকেই আছেন কিন্তু তাদেরকে কিন্তু আমরা ওভাবে দেখি নাই।
শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিকভাবে আমরা মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছি। বাজেটের ডেফিসিটি আমরা ৬ শতাংশ ধরেছিলাম। এখানে আমার সিদ্ধান্ত ছিল, দরকার হলে ১০ শতাংশ ধরবো।
কিন্তু সেটা আমাদের লাগেনি। ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেই আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি। কারণ, আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক দল, যার একটা ইকোনমিক পলিসি আছে, সেটাকে মাথায় রেখেই আমরা কিন্তু কাজ করে যাই।
তিনি বলেন, আমরা পার্টির যে পলিসি সেটাকে মেনেই কিন্তু সব পদক্ষেপ নিচ্ছি।
২০০৮ সালে সরকার গঠন করে ২০১০ সালে আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিয়েছিলাম ২০১০ থেকে ২০২০। এখন আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সেটাও আমরা গ্রহণ করেছি।
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, আমাদের নদীগুলো ভাঙছে। এতে নদীগুলোরই ক্ষতি হচ্ছে। নদীগুলোকে বাঁচানো দরকার। আমরা ডেল্টা প্ল্যান করেছি।
ডেল্টা প্ল্যানের একটাই লক্ষ্য, আমাদের যতগুলো বড় নদী আছে সেগুলোকে ড্রেজিং করে নাব্যতা বজায় রেখে এই বদ্বীপটা রক্ষা করা এবং সুরক্ষিত করা।
দেশের মানুষকে কীভাবে সুন্দরএকটা জীবন দেওয়া যায়, অর্থনৈতিক উন্নয়নটা ত্বরান্বিত করাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছি, বাস্তবায়ন করছি।
সভায় করোনাভাইরাসে প্রাণ হারানো দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও সাহারা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।