কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে শনিবার পর্যন্ত ৫০ হাজারের অধিক মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি রাখার সমস্যা নিরসন করা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল কোর্টের অনেক সাফল্য পাওয়া গেছে। তবে ভার্চুয়াল কোর্টকে আরো সাফল্য মণ্ডিত করতে গেলে বিচারক ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
মুন্সিগঞ্জে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আট তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রবিবার ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
মুন্সিগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. জাকারিয়া মোল্লা প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।
ভার্চুয়াল কোর্টকে আরো সাফল্য মণ্ডিত করার জন্য প্রধান বিচারপতি যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার জন্য আইসিটি বিভাগকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে যা এখন পরিকল্পনা কমিশনে আছে। এ প্রকল্প কিছুদিনের মধ্যে একনেক মিটিংয়ে উঠবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৩১ লাখ মামলার জট থাকবে না। গত ১২ বছরে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জননেত্রী শেখ হাসিনা যতটা সক্রিয় ছিলেন তার পাশাপাশি সহযোগিতা করেছে বিচার বিভাগ।
এই সহযোগিতা এবং বিচার বিভাগের কাজ যেভাবে চলছে সেভাবে চলতে থাকলে নিশ্চিত বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ সফল হবে।
মন্ত্রী বলেন, ৩১ লাখ মামলাজট নিয়ে সরকার অত্যন্ত সজাগ। এ জট নিরসন করা হবে। এ জট নিরসনের জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি আদালত সংখ্যা বাড়াচ্ছে, বিচারকের সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি কর করা হচ্ছে।
তাছাড়া সরকার আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ^াস করেন। যে মামলাগুলোর বিচার না হলে আইনের শাসন ব্যহত হতো সেগুলোর বিচার তাঁর সরকারের মেয়াদে সম্পন্ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে সুযোগ সুবিধা দিলে এবং অবকাঠামো দিয়ে সহায়তা করলে বিচার বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করতে পারে।
বিচার বিভাগের অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল একাডেমি স্থাপন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এজন্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন প্রকল্পটির ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। আইনজীবীদের জন্য ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। বিদেশে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।