বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন নানা আয়োজনে পালন করছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটোরিয়ামে শহীদ শেখ কামালের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেখ কামালের বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
আব্বা তো বেশিরভাগই জেলে থাকতেন। কামাল জন্ম হওয়ার পর থেকে আব্বা বেশিরভাগই জেলখানায়। কামাল তো আব্বাকে আব্বা বলে ডাকারই সুযোগ পায়নি। আমরা একসঙ্গে যখন খেলতাম, আমি আব্বা বলে ডাকতাম, ও আমাকে জিজ্ঞেস করতো- হাসু আপা, আমি তোমার আব্বাকে একটু আব্বা বলে ডাকি। আমরা ভাইবোনরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। সবাই বাবার হাত ধরে স্কুলে যায়, আমাদের সেই সুযোগ হয়নি।
আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন? একটা মৃত্যু হলে তার বিচার দাবি করেন আমার কাছে। আর আমি কিন্তু বিচার পাইনি। আমরা বিদেশে ছিলাম। আমরা দেশে ফিরতে পারিনি। আমাদের দেশে ফিরতে বাধা দিয়েছে। এরপর আমি যখন ফিরলাম, আমি মামলা করতে পারিনি। কারণ মামলা করার কোনো অধিকার আমার ছিল না। আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যে এই মামলা আমি করতে পারবো না। ২১ বছর পর সরকারে এসে তারপর মামলা করে সেই বিচার করি।
আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া আদায় করি এবং কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। তারা অন্তত আমাকে তাদের এই সেবা করার যেমন সুযোগ দিয়েছে আর এই অন্যায় অবিচারের বিচার করার সুযোগ আমরা পেয়েছি।
নিজের জন্য কোনোদিন সে কিছু চাইত না। লেখাপড়া, নাট্যচর্চা নিয়ে ব্যস্থ থাকতো। তার নাটক আমি নিজে দেখতে গেছি। বিভিন্ন সময়ের উপস্থিত বক্তৃতা, প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই তার প্রতিভা ছিল।
দেশের জন্য, দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য বিশেষ করে বাঙালি জাতির জন্য আমার বাবা যেমন করে সারাজীবন উৎসর্গ করে গেছেন, আমরা ভাইবোনও পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। সবাই বাবার হাত ধরে স্কুলে যায়, আমাদের সেই সুযোগ হয়নি। কিন্তু মা আমাদের সবসময় লেখাপড়ায় সবদিকে নজর দিতেন। ছোট বেলা থেকেই কামাল শুধু খেলার মধ্যে তা না, সাংসারিক কাজেও আমার মাকে সবরকম সহযোগিতা করতেন। ওই ছোট্ট বয়স থেকেই যে খুব দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতো। আজকে কামাল আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু আজকে তার সৃষ্টি আবাহনী ক্লাব এখনো আছে।
শেখ কামালের ৭১তম জন্মদিন উপলক্ষে একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া শেখ কামালসহ ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবার আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়।