গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতার জন্য ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
রবিবার রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত এসব নির্দেশনা দেন।
রায়ে অধ্যক্ষ মাহফুজা হত্যার ঘটনায় তার বাসার দুই গৃহকর্মী রিতা আক্তার ওরফে স্বপ্না ও রেশমা আক্তার ওরফে রুমাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার ১ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
১. গৃহকর্মী নিয়েগের তারিখ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত তাকে সতর্কভাবে পযর্বেক্ষণ করতে হবে, যাতে তারা বাসার মূল্যবান মালামাল চুরি করে পালিয়ে যেতে না পারে। গৃহকর্মী কোনো অন্যায় কাজ করলে তাকে কোনো প্রকার আঘাত বা মারধর না করে সংশ্লিষ্ট থানা বা সমাজসেবা অফিসারকে এ বিষয়ে অবগত করতে হবে।
২. বাসার গৃহকর্মী রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই তার বিস্তারিত তথ্য রাখা উচিত। এ ক্ষেত্রে গৃহকর্মীর জীবন বৃত্তান্ত ও ছবি রাখতে হবে।
৩. বাসার মূল প্রবেশ পথে সিসি ক্যামেরা না থাকলে অবিলম্বে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. কোনো গৃহকর্মী যদি অন্য কোনো গৃহকর্মীকে কোনো বাসায় কাজ দেয়, তাহলে তার নাম ঠিকানাও সংশ্লিষ্ট থানায় সংরক্ষণ করতে হবে।
৫. গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই লাইসেন্স নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট থানাকে কোম্পানির কার্যক্রমের বিষয়ে অবগত করতে হবে।
৬. গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই তাদের নিবন্ধিত গৃহকর্মীদের ছবি ও জীবন বৃত্তান্ত থানায় জমা দিতে হবে।
এছাড়া, রাজধানীসহ অন্যান্য এলাকার বাসিন্দাদের এ বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক হওয়া খুবই জরুরি বলে পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত।
২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এলিফেন্ট রোডে নিজের বাসায় খুন হন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী। ওই ঘটনায় তার স্বামী ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমত কাদির গামা নিউ মার্কেট থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ ওই বাসার গৃহকর্মী স্বপ্না ও রুমা এবং রুনু বেগম নামে এক নারীকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেয়। পরে স্বপ্না ও রুমা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই স্বপ্না ও রুমাকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন নিউ মার্কেট থানার এসআই আলমগীর হোসেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারক রায়ের জন্য ৪ অক্টোবর দিন ঠিক করে দেন।