কঠোর লকডাউনের শেষদিন আজ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে বিধি-নিষেধ শিথিল করেছে সরকার। তবে বুধবার (১৪ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাসের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। কাল সূর্যের আলো ফোটার আগেই রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাবে।
সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় দেশজুড়ে কঠোর লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল দূরপাল্লার যানবাহন। কিন্তু ঈদ সামনে রেখে সরকার লকডাউন শিথিল করায় ১৫ জুলাই থেকে চলবে গণপরিবহন। ফলে একদিন আগেই সরব হয়ে উঠেছে রাজধানীর গাবতলীর দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো।
দেড় মাস পর দূরপাল্লার বাস চালু হওয়ায় পরিবহন শ্রমিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছুটবে পরিবহনগুলো। তবে বাস যাত্রীদের গুনতে হবে দ্বিগুণ ভাড়া।
গাবতলী বাস টার্মিনালে বরিশাল লাইনের গোল্ডেন লাইন কাউন্টার সকাল ৯টায় খুলেছে। সকাল থেকে কিছু সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ শেষ করে বুধবার রাতের বাসের টিকিট বিক্রি করছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ বৃহস্পতিবার থেকে আট দিনের জন্য শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে গণপরিবহন। এই সময়ে মানুষকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়িতে যাতায়াত করতে হবে।
এ নির্দেশনার পরই বাস চলাচলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুধবার থেকে বাসের টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে। এছাড়া চেষ্টা চলছে রাতেই অনলাইনে টিকিট ছাড়ার। তা না হলে বুধবার থেকে এটাও চালু হবে। তবে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ এ নীতিতে চালু হচ্ছে এবারের টিকিট বিক্রি। অন্যান্য বছর যেভাবে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি করা হয়েছে, এই অল্প সময়ের মধ্যে এবার সেভাবে করা যাচ্ছে না।
ঈদ উপলক্ষে গণপরিবহন চালুর এই খবরে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলোতে শুরু হয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের আনাগোনা। চলছে কাউন্টার ও গাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। গাড়িগুলোর ব্যাটারি ও ইঞ্জিন পরীক্ষা করছেন শ্রমিকরা। রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এ সময় কথা হয় কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাস চালুর খবরে তারা আনন্দ প্রকাশ করেন।
রাজধানীর গাবতলী ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রজ্ঞাপন জারির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে জড়ো হচ্ছেন। নিজেদের কাউন্টারগুলো খুলে স্যানিটাইজার, স্যাভলন, ডেটল দিয়ে পরিষ্কার করছেন। ময়লা পরিষ্কার করে আবারও নতুন করে কাজ শুরু করার চেষ্টায় রয়েছেন তারা। সবার মনে যেন এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে সাধারণ জনগণ গণপরিবহন চালুর বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। তাদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে।