সাম্প্রতিক শিরোনাম

চিৎকার করে কাঁদতে চেয়েও কাঁদতে পারেনি অসহায় শিশু শেখ রাসেল

চিৎকার করে কাঁদতে চেয়েও কাঁদতে পারেনি অসহায় শিশু শেখ রাসেল

মায়াবী এক শিশুর গল্প শোনাই। না, রূপকথার গল্প নয়। এই শিশুর জগৎ এক মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারে। বাবা-মা আর দুই ভাই ও দুই বোনের আদরের এই চপল শিশুটিকে যেন চোখে চোখে রাখত সবাই। পরিবারের কনিষ্ঠ এই সদস্যটি ছিল সবার আদরের, ভালবাসার। তাকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল সবার, এটাই স্বাভাবিক। বাঙালী মধ্যবিত্ত পরিবারের সব অভিভাবকই সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। দেখেছিলেন এই শিশুর অভিভাবকরাও। এই শিশুটির ছিল দুই ভাই, দুই বোন। দুই ভাইয়ের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী অর্থাৎ তার দুই ভাবি। সেই শিশুর দুই চোখে ছিল অপার বিস্ময়। মায়াভরা মুখ সবার দৃষ্টি কাড়ত।

রাজনৈতিক পরিবারটি ছিল দেশের রাজনীতির কেন্দ্র। কাজেই দিনরাত সেখানে মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকত। সবার আদর পেত শিশুটি। সহজাত সারল্য ছিল তার। ছিল অন্যকে আকর্ষণ করার অসামান্য মায়াবী ক্ষমতাও। আপন ভুবনে শিশুরা রাজাধিরাজ। এই শিশুও শিশুরাজ্যের রাজা ছিল। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র হিসেবে সমবয়সী কিছু বন্ধুও ছিল তার। সবার সঙ্গেই ছিল সদ্ভাব। মানুষকে আকর্ষণ করার অসাধারণ ক্ষমতা তখনই অর্জন করেছিল সে। এই শিশুটির কি কোন স্বপ্ন ছিল? সকালের সূর্যোদয় কি কোন বার্তা পাঠাত তাকে? সন্ধ্যার পশ্চিমাকাশ কেন আবীর মাখে এমন প্রশ্ন হয়ত কোন কোনদিন উঁকি দিয়েছে তার মনে। আমরা তা জানি না, জানতে পারিনি।

ছেলেবেলা গ্রন্থের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বালক নামে একটি কবিতায় লিখেছেন, ‘জুটেছি বৌদিদির কাছে ইংরেজি পাঠ ছেড়ে,/মুখখানিতে ঘের দেয়া তার শাড়িটি লালপেড়ে। চুরি করে চাবির গোছা লুকিয়ে ফুলের টবে স্নেহের রাগে রাগিয়ে দিতেম নানান উপদ্রবে।’ এই শিশুটিও হয়ত শৈশবের চপলতায় তার ভাবিদের এভাবে স্নেহের রাগে রাগিয়ে দিতে পারঙ্গম ছিল। ঢাকার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রটিকে কিন্তু নিয়মিত ক্লাসে পাওয়া যেত। সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে তার সদ্ভাব ছিল না এ কথা কেউ বলতে পারবে না। স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে গৃহশিক্ষক, সবারই পছন্দের শীর্ষে ছিল সে।

মা-বাবার মমতায়, ভাই-বোনের ভালবাসার ভেলায় ভেসে দিন যাচ্ছিল তার। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বর বাড়িটির সামনেই লেক। বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে সামনে অনেকদূর চলে যাওয়া যায়। ধানমন্ডি লেকের পাড় আর এই রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালাতে চালাতে একটু একটু করে নিজের চেনা জগতের পরিধি বাড়িয়ে নেয়ার ভেতর দিয়ে দিন কাটত তার।

স্বাধীনতা-পূর্বকাল থেকেই যে বাড়িটি ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু, সেখানে মানুষের যাতায়াতও ছিল অবাধ। বাড়ির কনিষ্ঠ সদস্যটি সব বয়সের মানুষেরও প্রিয়জন হয়ে উঠতে পেরেছিল সহজাত সারল্যে। সেই শিশুটি আজ কেবলই স্মৃতি। তার স্মৃতিচারণ করার জন্য বেঁচে আছেন দুই বোন। ছোট এই ভাইটিকে নিয়ে দুই বোনেরও নিশ্চয় অনেক স্বপ্ন ছিল। ছোট ভাইটির নিত্য আবদার ছিল তাদের কাছে। নিত্য আবদার করা আদরের ভাইটি কোথায় আজ?

ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে তাকে। কী দোষ ছিল তার? একরত্তি শিশু, জাগতিক কোন বোধ যাকে ছুঁয়ে যায়নি তাকে কেন ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হলো? যে বয়সে আপন ভুবনে রাজা হয়ে থাকার কথা তার, সেই বয়সে তাকে পরপারে পাড়ি জমাতে হলো? ধারণা করা যেতে পারে, রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বহন করে আজকের বাংলাদেশে কিছু না কিছু ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়ত তৈরি হতো তার জন্য। কিন্তু অকালেই তো হারিয়ে গেছে সে।

বাবা, মা, ভাই, ভাবিদের হারিয়েছে। নিজেও হারিয়ে গেছে কোন দূরলোকে! সেই অনন্তলোক থেকে কেউ কোনদিন ফেরে না। শুধু কিছু স্মৃতি রয়ে গে
ছে তার দুই বোনের মনের গহীন কোণে, যে স্মৃতি তারা বয়ে বেড়াবেন আজীবন। তাদের হৃদয়ের সেই গভীর ক্ষত কোনদিন দেখবে না কেউ। কেউ জানবে না ছোট ভাইটির জন্য দুই বোনের গোপন অশ্রু বিসর্জনের কথা। ছোট ভাইয়ের জন্য বোনের মনে স্নেহ ও ভালবাসার যে ফল্গুধারা তা বাইরের কেউ বুঝতে পারে না। হয়ত এখনও ধানম-ির ৩২ নম্বরের বাড়িতে গেলে দুই বোনের চোখে ভাসে সেই মায়াভরা মুখ, সেই দুষ্টুমিভরা চাহনি। কিন্তু বোনের বাড়িয়ে দেয়া হাতে ধরা দেয় না ছোট ভাইটি আর। তাকে আর বুকে তুলে নেয়া হয় না। শুধু বুকের ভেতরে থাকা কষ্টগুলো ঝরে পড়ে দুই চোখ বেয়ে অশ্রু হয়ে।

এক কলেরাতের কাহিনী আমরা জানি। বাংলা ও বাঙালীর ইতিহাসের এক কলঙ্কময় দিনকে আমরা জানি, যেদিন পুব আকাশে উঠেছিল রক্তমাখা সূর্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। চারদিকে তখন কেবলই গুলির শব্দ। ঘাতকের গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন বাড়ির সব সদস্য। মায়াভরা মুখের এই দেবশিশুটি যেতে চেয়েছিল তার মমতাময়ী মায়ের কাছে। অবুঝ শিশু বোঝেনি ঘাতকের প্রাণে মায়া থাকে না। ষড়যন্ত্রকারীদের নির্মম বুলেট বিদ্ধ করেছিল তাকে। ঘাতক বোঝেনি অবুঝ শিশুর মন।

ঘাতক বোঝেনি বোনের ভালবাসাও। ঘাতক কেবল ট্রিগার চাপাতে জানে। ঘাতক বোঝে না জাতির ভবিষ্যত। বর্তমানের মিথ্যা হিসাব নিয়ে ঘাতকরা মাতে হত্যার উল্লাসে। অবুঝ শিশুও টার্গেট হয় তার। তাতে যে দীর্ঘ হয়েছে দীর্ঘশ্বাস সেই কথা ঢের লেখা আছে ইতিহাসে। শুধু লেখা নেই আড়ালে কাদের বুকে শোকের সাগর বয়ে চলে অবিরাম।

সেই শিশুটির নাম শেখ রাসেল। আজ হয়ত হদয়ের সেলুলয়েডে ধরে রাখা ছবিগুলো তাদের চোখে আনবে অশ্রুবন্যা। ছোট ভাইটির মায়াভরা সেই মুখ হাসিনা ও রেহানা আপাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাবে বেদনার অতল সাগরে। সে বেদনা বইবার ভার কেবলই তাদের!

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...