স্নেহের প্রিয় ছোট ভাই আবদুল হাইকে ছায়ার মতো আগলে রাখতেন বড় ভাই আবদুল হামিদ। পরম মমতায় সব সময় নিজের পাশে পাশে রাখতেন। সেই প্রিয় অনুজ এমন করে তাঁকে ফাঁকি দিয়ে পরপারে চলে যাবেন, কল্পনায়ও ছিল না। করোনা মহামারি সবার সব হিসাব ওলটপালট করে দিয়েছে। কত প্রিয়জন, কত আপন মানুষ, কত প্রিয় মুখকে কেড়ে নিচ্ছে এই মহা নিষ্ঠুর ভাইরাস। প্রিয় ছোট ভাইটির মৃত্যুতে তাই ভীষণ মুষড়ে পড়েন বড় ভাই। মৃত্যুর পর হেলিকপ্টারে করে ছোট ভাইয়ের মরদেহ জন্মগ্রাম কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে নিয়ে যেতে হবে, মা-বাবার কবরের পাশে শায়িত করতে হবে, এ যে কত কষ্টের, কত বেশি বিষাদের তা শুধু মহা হৃদয়বান বড় ভাই-ই জানেন। জানেন বলেই প্রিয় ছোট ভাইয়ের স্মৃতি বুকে আগলে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তাবলয়কে পাশে ঠেলে গ্রামে ছুটে গেলেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কথা ছিল রবিবার দাফন শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বঙ্গভবনে ফিরে আসবেন। কিন্তু বড় বেদনা হয়ে বেজে ওঠে প্রিয় ভাইটির মুখ, প্রিয় ভাইটির স্মৃতি। গতকাল সোমবারও রাষ্ট্রপতি প্রিয় ছোট ভাইয়ের স্মৃতি আঁকড়ে রয়ে যান জন্মগ্রামে। আজ মঙ্গলবার তাঁর বঙ্গভবনে ফেরার কথা রয়েছে।
দীর্ঘ কর্মজীবনে দুই ভাইয়ের গভীর ভালোবাসা কাছে থেকে দেখেছেন রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীন। তিনি জানান, আবদুল হাই ও তাঁর ছেলেসহ পরিবারের করোনায় আক্রান্ত অন্য সদস্যদের নিয়মিত খোঁজ নিতেন রাষ্ট্রপতি। গত ২ জুলাই নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এলে ৫ জুলাই আবদুল হাইকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় গত ১৭ জুলাই ভোররাতে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তাঁর।
বঙ্গভবন, সংসদ ভবন ও কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতে, ছোট ভাইয়ের প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কতটা ভালোবাসা ছিল, তা শতধায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাঁর মৃত্যুর পর। করোনায় আক্রান্ত আবদুল হাইয়ের জানাজা ও দাফন গত শনিবার হওয়ার কথা থাকলেও তা রবিবার করা হয় রাষ্ট্রপতির জন্য। ভাইকে শেষবিদায় জানাতে রবিবার হেলিকপ্টারযোগে মিঠামইনে পৌঁছেন তিনি। নিজ বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে প্রিয় অনুজকে চিরনিদ্রায় শায়িত করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, ছোটবেলা থেকেই হাইকে নিজের আদর্শে গড়ে তুলেছিলেন তিনি। স্কুলে পড়া অবস্থায় বড় ভাই হামিদের নেতৃত্বে অংশ নিয়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। সংসদ সচিবালয়ের উপপরিচালক পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর আবদুল হাইকে বঙ্গভবনে নিজের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের কারণে রাষ্ট্রপতির দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন আবদুল হাই। একান্ত পারিবারিক ও রাজনৈতিক অনেক কিছুই তাঁকে দেখভাল করতে হয়েছে। অনেকেই রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছতে না পারলে তাঁর দ্বারস্থ হতেন। সংসদ সচিবালয়ের উপসচিব (ট্রেনিং অ্যান্ড প্রিভিলেজ) এস এম মঞ্জুর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরলতা ও সহজিয়া চরিত্রের জন্য আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর কাছে প্রিয়পাত্র ছিলেন আবদুল হাই।’ অতিশয় বিনয়ী ও সংস্কৃতিমনা সাদা মনের মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের জন্ম ১৯৫৩ সালে। তিনি মিঠামইন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার, বিআরডিবির সভাপতি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রবাহর সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বভাবগতভাবে আনন্দপ্রিয় রাষ্ট্রপতি প্রিয় অনুজের মৃত্যুতে এখন বিমর্ষ সময় পার করছেন।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার নিভৃত হাওর জনপদ কামালপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী তায়েব উদ্দিন ও তমিজা খাতুন দম্পতির ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় আবদুল হামিদ ও পঞ্চম আবদুল হাই। যৌথ পরিবারে বেড়ে উঠা ভাই-বোনদের সবার মধ্যে গভীর সুসম্পর্ক থাকলেও এই দুই ভাইয়ের সম্পর্কটা ছিল আরো গভীর। বয়সে ৯ বছরের ছোট আবদুল হাইয়ের প্রতি আবদুল হামিদের ছিল অন্য রকম ভালোবাসা। সব সময় তাঁকে আগলে রাখতেন। সারাটা জীবন বড় ভাইয়ের ছায়ায় কাটিয়েছেন আবদুল হাই।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment