মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করার প্রতিবাদে পবিত্র জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ থেকে ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন মুসল্লিরা।
শুক্রবার জুমা শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে কয়েক হাজার মুসল্লির উপস্থিতিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এ বিক্ষোভের আয়োজন করে ইসলামী দলগুলো।
বিক্ষোভ মিছিলটি বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পুরানা পল্টন, কাকরাইল, বিজয়নগরসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় স্লোগান দেওয়া হয়- ‘বিশ্বনবীর অপমান, সইবে না রে মুসলমান’, ‘ম্যাখোঁর চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, মুসলমান জেগেছে’, ‘বয়কট বয়কট, ফ্রান্সের পণ্য বয়কট’, ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, ফ্রান্সের দূতাবাস’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, সংসদে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন করা, বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্সের দূতাবাস সরিয়ে নিতে সরকারকে যথাযথ প্রদক্ষেপ নিতে বলেন বক্তারা।
এ ছাড়া রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ, শান্তিনগর, মৌচাক, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে চলে আসেন।
এতে করে বিক্ষোভে হাজারো মুসল্লির সমাগম হয়।
লালবাগ মসজিদ থেকে মিছিল করেন সাধারণ মুসুল্লিরা। পলাশীর মোড় ঘুরে এ মিছিল সমবেত হয় শহীদ শাহ মাজারে। পথে পথে বিভিন্ন মসজিদ থেকে সাধারণ মানুষ যোগ দেন এ বিক্ষোভে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে শুক্রবার সকালে গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘আশেকানে গাউছিয়া রহমানীয়া মইনিয়া সহিদীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া’র উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয়েছে। এ সময় ফ্রান্সে মহানবী (সা.)-কে ব্যঙ্গ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
‘আশেকানে গাউছিয়া রহমানীয়া মইনিয়া সহিদীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলহাজ্ব শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সহিদ উদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী (মা. জি. আ.) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী জনাব শাজাহান খান। মহানবী (সা.)-এর তাৎপর্যপূর্ণ জীবনী তুলে ধরে তিনি বলেন, সন্ত্রাস করে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে না, ভালোবাসার মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর মাধ্যমে জনমত সৃষ্টি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব শামসুল হক টুকু হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর জীবনী ও জন্মদিনের তাৎপর্য তুলে ধরে করোনাভাইরাস যাতে বাংলাদেশসহ বিশ্ব থেকে বিদায় নেয়, সেই প্রার্থনা জানান।
এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ তথা মানুষের কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলহাজ্ব শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সহিদ উদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী (মা. জি. আ.)।
এর আগে তিনি নবীজির জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সর্বদা নবীর দরুদ পাঠ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদ, বিশিষ্টজন, ওলামায়ে ক্বেরামগণসহ ভক্ত ও আশেকান উপস্থিত ছিলেন।