লিজে নেওয়া দুইটা ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজ পরিচালনায় প্রতিমাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল।
উড়োজাহাজ দুটি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই হাজার দুই শ কোটি টাকা এবং পরিচালনায় খরচ হয়েছে তিন হাজার তিন শ কোটি টাকা।
অর্থাৎ দু’টি উড়োজাহাজ পরিচালনায় সরকারের নিট লস এক হাজার এক শ কোটি টাকা। তবে সেই দায়-দেনা থেকে মার্চ মাস হতে বিমান মুক্ত হতে পেরেছে।
বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
বৈঠকে কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর লিজ নেয় বিমান। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৪ সালের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে।
এক বছরের কম সময় অর্থাৎ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে আরেকটি ইঞ্জিন ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়া করা হয়। দেড় বছরের মাথায় বাকি ইঞ্জিনটিও নষ্ট হয়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আরেকটি ইঞ্জিন ভাড়ায় আনা হয়।
গত ডিসেম্বরে সেটাও নষ্ট হয়ে যায়। পরে ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোন সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে লিজ নেওয়া প্রতিষ্ঠান ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান উভয়কেই অর্থ দিতে হয় বিমানকে।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিমান লিজ সংস্কৃতি থেকে একেবারে বেরিয়ে আসতে চাইছে। এ বছরে নতুন তিনটি ভ্যাশ-৮ বিমান আসার কথা ছিল।
তার মধ্যে দুইটা এ বছরের মধ্যে বিমান বহরে যুক্ত হবে। আরেকটি জানুয়ারিতে বিমান বহরে যুক্ত হবে। এ বিমান দু’টি ২৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কেনা হয়েছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার বলেন, বিমানের লিজ প্রক্রিয়াটা স্পষ্ট নয়। এই বিষয়টা নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল। আগামীতে বিমানের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, কমিটি বৈঠকে ‘আকাশপতে পরিবহণ (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল-২০২০ এবং ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল এজিন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আলোচনা শেষে সংসদীয় কমিটির সুপারিশসহ বিল দু’টি পাসের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বৈঠকে অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে আধুনিক ও যুগোপযোগী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।