একের পর এক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশকেও বলা হয়ে আসছে উচ্চ-ঝুঁকির দেশ।
আজ ১০ জুলাই শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের মতো অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে দেশের সর্বশেষ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৭৭ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ হাজার ৩৭৭ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৩ হাজার ৪৮৮ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৯ লাখ ১৮ হাজার ২৭২ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ২ হাজার ৯৪৯ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৭ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো দুই হাজার ২২৭৫ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১৮৬২ জন মোট ৮৬ হাজার ৪০৬ জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২১.৮৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৮.৪২ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ২৯ নারী ৮ জন।
এদিকে করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটিতে মারা গেছে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৭ জন মানুষ। আর এ সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ২২ লাখ ৩২ হাজার ২১১ জন। বিশ্বের ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ প্রাণঘাতী ভাইরাস।
ইউরোপে এখন করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে আসলেও আমেরিকার দুই মহাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থতার হার দ্রুত বাড়ছে। মৃতের হারও কমছে।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ লাখেরও বেশি এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষের।
করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু ব্রাজিলে। সেখানে ১৭ লাখ ৫৫ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত এবং মারা গেছে ৬৯ হাজার ১৮৪ জন।
করোনায় তৃতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে ভারতে। দেশটিতে ৭ লাখ ৬৭ হাজার জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কম। মৃত্যুর সংখ্যায় অষ্টম দেশটি। সেখানে করোনায় মারা গেছে ২১ হাজার ১২৯ জন।
চতুর্থ সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ রাশিয়া। সেখানে ৭ লাখ ৬ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে রাশিয়াতেও মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক কম। মৃত্যুর দিক দিয়ে রাশিয়া বিশ্বে ১১ তম। সেখানে করোনায় মারা গেছে ১০ হাজার ৮২৬ জন মানুষ।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ২১৫ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কভিড-১৯। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।