বৈশ্বিক প্রানঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। বাংলাদেশেও একই অবস্থা বিরাজমান।
দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৭১ জন, মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের আর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৭৭৭ জন।
আজ ৯ জুন মঙ্গলবার অপরাহ্নে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় ৫৫ টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৬৬৪ টি নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও ৩ হাজার ১৭১ জনের দেহে। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ হাজার ৬৭৫ জন।
ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৫ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৭৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৭৭৭ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৩৩৬ জনে।তিনি আরও বলেন, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ এবং ১২ জন নারী।
এদিকে চীনের উহানে প্রথমে শনাক্ত হওয়া নভেল করোনা ভাইরাস (কভিড ১৯) ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও।
বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। করোনার তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট কভিডভিজ্যুয়ালাইজার এর তথ্যে জানাযায়, আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১১ টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫৪ জন ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ০৮ হাজার ৭৩৭ জনের। যা আক্রান্তের ৫.৬৮%। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯১ জন। যা আক্রান্তের ৪৯.১৫%।
অপরদিকে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ কথা জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস।
তাই তিনি মনে করেন, মহামারির ছয় মাস সময় পেরিয়ে গেলেও এখনই বিভিন্ন দেশে চলমান লকডাউন শিথিলের সময় আসেনি।
সোমবার জেনেভায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ইউরোপের অবস্থার উন্নতি হলেও বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ১০ দিনের মধ্যে নয়দিনই এক লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। রোববার শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজারেরও বেশি। এটি বিশ্বে একদিনে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
গ্যাব্রিয়েসুস জানান, রোববার শনাক্ত রোগীদের ৭৫ শতাংশই পাওয়া গেছে মাত্র ১০টি দেশে। এর মধ্যে আবার বেশিরভাগই লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ।
তিনি বলেন, যেসব দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে সেখানে এখন সবচেয়ে বড় হুমকি ‘আত্মতুষ্টি’। আর তিনি মনে করেন, বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এখনও করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও বলেন, মহামারির ছয় মাসেরও বেশি সময় গেছে। তবে কোনও দেশের জন্য এখনই পুরোপুরি লকডাউন তুলে নেয়ার সময় আসেনি।