বিভাগ জাতীয়

ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ইসলামী দল

সাম্প্রতিক সংবাদ
মুনতাহা মিহীর
Sponsored

ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ইসলামী দল।

জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে প্রথমে ‘সমমনা ইসলামী দলসমূহ’-এর ব্যানারে ৬টি দল এবং পরে ইসলামী আন্দোলনের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বন্ধে শুধু আইন করলেই হবে না আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। একইসঙ্গে আইনের অপপ্রয়োগ থেকেও বিরত থাকতে হবে। জিনা-ব্যাভিচার ও ধর্ষণের বিচারে শরিয়া আইন করারও দাবি জানান তারা।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ধর্ষণ ও জিনা-ব্যভিচার প্রতিরোধে ৬ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সমমনা ইসলামী দলসমূহ।

ব্যাপক সংখ্যক মুসল্লির অংশগ্রহণে এ মিছিলটি বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর এলাকায় গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

সেখানে সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, সমমনা ইসলামী দলসমূহের সমন্বয়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ধর্ষণ -নির্যাতন বন্ধে শুধু আইন করলেই হবে না আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। জিজনা, ব্যভিচার, ধর্ষণের উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধ করতে হবে।

দেশে একদিকে করোনাভাইরাসের আক্রমনে অন্যদিকে মা-বেনদের ইজ্জত আব্রু লুন্ঠিত হচ্ছে। হায়েনার মতো নারীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ছে, হত্যা নির্যাতন করা হচ্ছে। ধর্ষণের উৎস পশ্চিমা নগ্নতা, বেহায়াপনা বন্ধ না হলে ধর্ষণ বন্ধ হবে না।

পশ্চিমা সংষ্কৃতির কারণে সমাজ থেকে লজ্জা, শরম উঠে যাচেছ। অপসংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। আমাদের শিক্ষানীতি ও পাঠ্যসূচিকে কোরআন সুন্নাহর আলোকে সাজাতে হবে।

তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার যদি দেশে খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্ম বন্ধ করতে না পারে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। সরকার নানাভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য সকল দলের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান কাসেমি।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মোহাম্মদ ঈশা সাহেদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী, মুসলিম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।

সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হচ্ছে- জিনা, ব্যাভিচার ও ধর্ষণ প্রতিরোধে জনসম্মুখে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা; মাদকদ্রব্যের অবাধ প্রাপ্তি ও ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা; নারীর অশ্লীল উপস্থাপনা ও পণ্য হিসাবে ব্যবহার বন্ধ করা; আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ এবং বিচার কাজকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখা এবং নারীর মর্যাদা এবং অধিকার সংরক্ষণে কুরআন-হাদীসের শিক্ষাসমূহ জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা।

বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ কর্মসুচির অংশ হিসেবে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন। পরে সেখান থেকে একটি মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

মিছিলপূর্ব সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, দেশে আইন থাকলেও আইনের বাস্তবায়ন নেই।

তাই শুধু আইন পাশ নয়, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান কার্যকর করে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। তিনি বলেন, শুধু ধর্ষণের মৃত্যুদন্ড নয়, যিনা-ব্যভিচার রোধেও আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশের জুলুম নির্যাতনে সিলেটে যুবকের মুত্যু বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। এই যদি হয় প্রশাসনের অবস্থা তাহলে সাধারণ মানুষ যাব কোথায়? তিনি ধর্ষকমুক্ত বাংলাদেশ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

ফয়জুল করীম বলেন, ধর্ষণের আইন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে, কিন্তু ধর্ষণ বন্ধ হচ্ছে না। দেশে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, অশ্লীল সিনেমা, হিন্দি ফিল্ম চালু রেখে ধর্ষণ বন্ধ করা যাবে না। ধর্ষণের এ আইন অপপ্রয়োগের বলি হয়ে নিরীহ মানুষ যেন না মৃত্যুমুখে পতিত না হয়।

তিনি ইসলামী আইনে জিনা-ব্যাভিচার, পরকীয়ার বিচারের দাবিতে ২৩ অক্টোবর ঢাকায় বিশাল সমাবেশ ও গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউস।

বক্তব্য রাখেন মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কেএম আতিকুর রহমান, ছাত্রনেতা এম. হাছিবুল ইসলাম, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ঢাকা জেলা সেক্রেটারী আলহাজ্ব শাহাদাত হোসাইন, হুমায়ুন কবির, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা এইচএম সাইফুল ইসলাম, মাওলানা বাছির মাহমুদ প্রমুখ।

পরে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকার মসজিদ থেকে বের হয়ে পল্টন মোড় হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে গিয়ে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

Sponsored
Leave a Comment

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…

January 12, 2024

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…

January 10, 2024

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…

January 7, 2024

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার…

January 6, 2024

এমনটা কেনো করলেন এ. আর রহমান?

হিরো আলম রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়ার পর সারা দেশে হইচই শুরু হয়ে যায়। এমনকি ওই প্রতিবাদের…

November 12, 2023

ন্যানোমিটার সেমিকন্ডাক্টর বা চীপ তৈরিতে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছে চীন

বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সেমিকন্ডাক্টর চিপ নিয়ে বড় ধরনের যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে রেড জায়ান্ট চীন।…

September 25, 2023
Sponsored