শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারী করোনা ভাইরাস সংকটের মধ্যেও পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছে ২৮তম স্প্যান। আজ ১১ এপ্রিল শনিবার সকাল নয়টার সময় ২০ ও ২১ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয় এটি। এর ফলে ৪ হাজার ২০০ মিটার
বা ৪ দশমিক ২ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। ২০ নম্বর পিলারটি মুন্সীগঞ্জে আর ২১ নম্বর পিলারটি জাজিরা প্রান্তে অবস্থিত।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এখন আর মাত্র ১৩টি স্প্যান বসে গেলেই সেতুর সব কটি স্প্যান বসানো সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, আমাদের আশঙ্কা অনেকটা দূর হয়ে গেছে। নভেল করোনাভাইরাসের মধ্যেও পুরোদমে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। জনবলের অভাবে সেতুর কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করলেও তা এখন কেটে গেছে। আমাদের শ্রমিক-কর্মীর অভাব নেই। পর্যাপ্ত কর্মী পাচ্ছি। কারণ সারা দেশে সরকারি ছুটির কারণে অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। শ্রমিকদের কাজ নেই। তাই তারা কাজের সন্ধানে ছুটে আসছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পে। কারণ আমাদের প্রকল্প এলাকা করোনাভাইরাসমুক্ত। দেশি-বিদেশি কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছেন। নদী এবং তীরে সবখানেই কাজ আর কাজ। কর্মীদের সবাই মাস্ক ব্যবহার করছেন। মাথায় নিরাপত্তা ক্যাপ আর মুখে মাস্ক। হাতে গ্লাভস নিয়ে হরদম কাজ করছেন। নিয়মিত স্প্রে করে ভাইরাসমুক্ত রাখা হচ্ছে সেতু এলাকা। তাই এখানে কাজ করতে কোনো অসুবিধা নেই।
তিনি আরো জানান, জাজিরা প্রান্তে এখন সেতুর ওপর দিয়ে নির্মাণ কাজের (মালবাহী) যানবাহন চলাচল করছে। ভারি ভারি লরি, ট্রাক যাচ্ছে সেতুর ওপর দিয়ে। বসে যাওয়া স্প্যানের ভেতরে নিচতলায় বসছে রেলওয়ে স্ল্যাব। আর ওপর তলায় বসছে রোডওয়ে স্ল্যাব। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হবে মোট ২৯১৭টি। এর মধ্যে ২৬০০ স্ল্যাব তৈরি হয়ে গেছে। বাকি ৩১৭ রোডওয়ে স্ল্যাব এখন তৈরির কাজ চলছে। এ পর্যন্ত রোডওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হয়ে গেছে ৪ শ। আর রেলওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হয়েছে ২৯৫৯টি। রেলওয়ের সব স্ল্যাবই তৈরি হয়ে গেছে। এর মধ্যে রেলওয়ে স্ল্যাব স্থাপন হয়েছে ৮৪৩টি।
এর আগে ২৮ মার্চ জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছিল সেতুর ২৭তম স্প্যান। চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।