জননিরাপত্তা বিধান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ দেশের যে কোন প্রয়োজন ও সংকটে অহর্নিশ দায়িত্ব পালন করতে হয় পুলিশ সদস্যদের। পেশাগত বৈচিত্রের কারনে ও অত্যন্ত ঝুঁঁকি নিয়ে এবং মানসিক চাপের মধ্যে নিয়মিত দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার ফলে পুলিশের অনেক সদস্য নানা দুর্ঘটনার শিকার হন এবং নানা ধরনের অসুস্থতায় ভোগেন।
এতে করে একদিকে অসুস্থ সদস্যদের নিজেদের কষ্টের পরিমান যেমন বেড়ে যায়, অপরদিকে তাদের জন্য জনগণকে মানসম্মত সেবা প্রদান কঠিন হয়ে পড়ে। তাই, পুলিশ সদস্যদের শারিরীক ও মানসিক সুস্থতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে জনগণকে মানসম্মত পুলিশি সেবা প্রদানের ধারাবাহিকতা অটুট রাখতে পুলিশ সদস্যদের জন্য মানসম্মত একটি চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এ বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন এবং তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ পুলিশের মেডিকেল সার্ভিসেস গঠন এবং বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কাজ করছেন ।
আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশের মেডিকেল সার্ভিসেস গঠন করতে চান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশ পুলিশের মেডিকেল সার্ভিসেস গঠন করবো। এছাড়া, আমরা পুলিশের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থারও উন্নয়নও ঘটাতে চাই। এজন্য আপনারা যারা পুলিশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত, তাদের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন। আপনাদের সবার মতামত নিয়ে সবাই মিলে পুলিশের চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন করতে চাই।
পুলিশের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় কোন কোন ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন প্রয়োজন, শয্যা সংখ্যা, ইকুইপমেন্ট, অপারেশন থিয়েটারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কি ধরনের পরিবর্তন এবং উন্নয়ন দরকার তা জানার লক্ষ্যে পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, প্যাথলজিস্ট, মেডিকেল এটেনডেন্ট, সমাজসেবা কর্মকর্তাদের নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার দুই দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। আইজিপি উভয় দিনই প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, চলমান করোনায় কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীসহ সকলে যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, অভূতপূর্ব সেবা দিয়েছেন সেজন্য পুলিশ প্রধান হিসেবে আমি অত্যন্ত গর্বিত। আপনাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন, বর্তমানে পুলিশে করোনা আক্রান্ত হওয়ার হারও অনেক কমেছে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে অন্যতম সেরা হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে পুলিশ সদস্যরা এখান থেকে সব ধরনের রোগের উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন। দেশের সকল বিভাগ ও জেলার পুলিশ হাসপাতালেরও আধুনিকায়ন করা হবে। অন্যান্য বিভাগের ন্যায় ঢাকায় একটি বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
আইজিপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুলিশ সদস্যসহ দেশে এবং দেশের বাইরে যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে যারা অসুস্থ রয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন আইজিপি। কর্মশালায় অতিরিক্ত আইজিগণ এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।