রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এরইমধ্যে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের জন্য লাল রঙ দিয়ে বৃত্ত আঁকা হয়েছে। দুই মাস বন্ধ থাকার পর আগামী রোববার (৩১ মে) থেকে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করতে যাচ্ছে সরকার। প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু রুটে ট্রেন চলাচল করা হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এদিন থেকে ট্রেন চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে। দুই দফায় ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় গত ২৫ মার্চ থেকে সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মিহির কান্তি গুহ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রোববার (৩১ মে) থেকে প্রথম দফায় তিনটি ট্রেন চালানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকা যাবে বিরতিহীন আন্তঃনগর বনলতা এক্সপ্রেস। লালমনিরহাট থেকে ঢাকা যাবে লালমনি এক্সপ্রেস। আর খুলনা থেকে ঢাকা যাবে চিত্রা এক্সপ্রেস। এসব ট্রেন আগের সময় অনুযায়ী গন্তব্যে যাবে। আবার নির্ধারিত স্থানে ফিরে আসবে।
আর দ্বিতীয় দফায় আগামী ৩ জুন থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস (রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাট), কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস (রাজশাহী-খুলনা), রুপসা (খুলনা-চিলাহাটি), নীলসাগর (ঢাকা-চিলাহাটি) ও বেনাপোল এক্সপ্রেস (ঢাকা-বেনাপোল) ট্রেন চলাচলের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এসব ট্রেনের টিকিট বিক্রিসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সব বিষয়ে আগামী শনিবার (৩০ মে) সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। তবে পরিস্থিতি ভালো হলে আগামী ১৫ জুন থেকে সব ট্রেন চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রতিটি স্টেশনে একটি করে অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন কক্ষ চালু ও যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ সম্পর্কিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের যাত্রীসেবার অংশ হিসেবে ও যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য প্রতিটি স্টেশনে একটি করে অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন কক্ষ চালু রাখা বিশেষ জরুরি। যেসব স্টেশনে একাধিক যাত্রীদের জন্য ওয়েটিং রুম রয়েছে তার মধ্যে উন্নতমানের ওয়েটিং রুমটি অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।
স্টেশনের প্রবেশদ্বার থেকে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষার পরে যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৯ ফা. এর ওপরে থাকবে তাদের জরুরিভাবে বর্ণিত অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত আসার আগেই রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ মুখে ও বহির্গমন পথে বসানো হয়েছে ‘জীবাণুনাশক কক্ষ’।
এছাড়া রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এরইমধ্যে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের জন্য লাল রঙ দিয়ে বৃত্ত আঁকা হয়েছে। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে এ বৃত্তের ওপর দাঁড়িয়ে যেন যাত্রীরা নিরাপদে টিকিট কিনতে পারেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু বৃত্ত অঙ্কনই নয়, স্টেশনে ঢোকার আগে হাত ধোয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনজুড়েই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে।