বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এ বছর বিশ্বে বন্যা দীর্ঘায়িত হবে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে তারা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের পূর্বাভাস যারা এ দুর্যোগের সঙ্গে পরিচিত নয় তাদের জন্য সহায়ক হবে, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য জাতিসংঘের পূর্বাভাসের প্রয়োজন নেই। এ দেশের মানুষ বন্যার সঙ্গে বসবাস করতে জানে, বন্যাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় জানে।
বন্যা নিয়ে জাতিসংঘের পূর্বাভাস প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বন্যা নিয়ে বসবাস করি। বন্যাকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় বাংলাদেশের মানুষ সেটি জানে। বন্যা আমাদের নিত্যসঙ্গী। জাতিসংঘের পূর্বাভাস যারা বন্যার সঙ্গে পরিচিত নয় তাদের জন্য সহায়ক। আমাদের জন্য এ পূর্বাভাসের প্রয়োজন নেই। বন্যাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা আমরা জানি। আমাদের কাছ থেকে অনেকে শিখতে পারে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক ভিডিও কনফারেন্সে ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আলিপুর রহমানীয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুলকর্তৃক সরকারের সমালোচনা প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব প্রতিনিয়তই একই ধরনের কথা বলেন। একই বাঁশি বহুদিন ধরে বাজাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, করোনায় মৃত্যুর হার পৃথিবীর যে কয়টি দেশে কম তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। এমনকি ভারত, পাকিস্তানের চেয়েও বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে।
তারা সঠিকভাবে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারেননি। আমরা বারংবার তাদের ব্যর্থতা দেখেছি। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে তাদের ব্যর্থতা দেখেছি। তাদের সিদ্ধান্তহীনতা ও ঘূর্ণিঝড়ের পর সঠিক কার্যক্রমের অভাবের কারণে লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ হানি হয়েছিল। ২০০৪ সালে বন্যায় দেশের মানুষ অনাহারে মারা গেছে। তারা যখনই ক্ষমতায় ছিলেন, কখনোই দুর্যোগ সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেননি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন তখনই তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে যে কোনো দুর্যোগ সঠিকভাবে মোকাবিলা করে দেখিয়েছেন। সেই সক্ষমতার জন্য তিনি আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃতও হয়েছেন। ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যায় দেশের ৭৫ ভাগ তিন মাস পানির নিচে ছিল। কিন্তু তখন মানুষ অনাহারে মারা যায়নি। এছাড়া সিডর, আইলাসহ অনেক দুর্যোগের কথা আমরা সবাই জানি। এর বাইরে গত ১১ বছরে অনেক বন্যা হয়েছে, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। তাতেও প্রধানমন্ত্রী সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে দেশের মানুষকে নিরাপদ রেখেছেন।
ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আলিপুর রহমানীয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত সরকারকে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই যে, এ ধরনের একটি প্রকল্প তারা হাতে নিয়েছে। উভয় দেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম ও ঐতিহাসিক। ভারত সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অব্যাহতভাবে সহায়তা করে গেছে।
‘বর্তমানে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কোনো একটি স্কুলের ভবন নির্মাণ করে দেওয়া বা দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ভবন নির্মাণ করে দেওয়া এক ধরনের মাইলস্টোন কর্মকাণ্ড। আমাদের দারিদ্র বিমোচন করার ক্ষেত্রে উভয় দেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দুই দেশের এই সম্পর্ক রাজনৈতিক বেড়াজালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আশা করছি, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। পাশের দেশের উন্নয়ন বাদ দিয়ে যে উন্নয়ন, সেটা টেকসই হয় না। ভারত ও বাংলাদেশের নেতারা তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। ’
ভিডিও কনফারেন্সে সভাপ্রধান হিসেবে যুক্ত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম ৫ আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।