সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক অঙ্গনে শীপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরে এক নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। এবার অতি সম্ভাবনাময় এই খাতটিকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পরিবেশবান্ধব বা গ্রীন শিপইয়ার্ডে রুপান্তরে যাত্রা শুরু করেছে। আর পরিবেশবান্ধব শীপইয়ার্ড গড়ে তুলতে এবার জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প সংশ্লিষ্ট সম্মানিত বিনিয়োগকারী ও মালিকেরা বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এবং তাদের এই উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা সুফল আমরা কিনা এখনই পেতে শুরু করে দিয়েছি।
আসলে বর্তমানে শীপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরে কর্মরত সম্মানিত শ্রমিকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি যতটা সম্ভব হ্রাস এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিদেশ থেকে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সাজ সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হচ্ছে। যা একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও চলমান কার্যক্রম। তার পাশাপাশি একাধিক ইয়ার্ডের চারপাশে পর্যাপ্ত গাছ লাগানো, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, পরিবেশ দূষণ রোধ, মানসম্মত আবাসন ও খাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ উন্নত প্রাথমিক চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করছেন শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের মালিকেরা।
আবার পরিবেশ দূষণ রোধ কল্পে সরকারের ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা বা গাইডলাইন অনুসরণ করে বেশকিছু শীপ ইয়ার্ড ইতোমধ্যেই গ্রিন শিপইয়ার্ডের স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। তাছাড়া অন্যান্য সকল শীপ ইয়ার্ড পর্যায়ক্রমে নিজেদের গ্রীন শিপইয়ার্ডে রুপান্তরের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। যা অবশ্যই এই খাতের জন্য একটি ইতিবাচক অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, এটি একটি ব্যয়বহুল ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়া। যা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে এ সেক্টরের সুফল ও সুবিধা এখন কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সারা দেশই ভোগ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে জাতীয় অর্থনীতি ও শিল্প বিপ্লবে আমাদের দেশের জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের অবদান রয়েছে। তার পাশাপাশি এখনে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজারের অধিক কর্মসংস্থানের সূযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের জাতীয় অর্থনৈতিক ও শিল্প উন্নয়নে এক রকম নিরবেই অনবদ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। মোট কথা আমাদের দেশের ভারি ইস্পাত ও প্রকৌশল শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহের একটি হাব হিসেবে গড়ে উঠেছে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প।
২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার সরাসরি রাজস্ব আয় করে ৩৮৪ কোটি টাকা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৭৫ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে। মূলত ডলার সংকটের মুখে জাহাজ আমদানি হ্রাস পাওয়ায় গত অর্থবছরে এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় অনেকটাই কমে যায়। তবে এ সমস্যা একেবারেই সাময়িক। ভবিষ্যতে এ খাত থেকে সরাসরি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের ইতিহাস ১৯৬১ সালের দিকে শুরু হলেও বিভিন্ন সময়ে নানা প্রতিকূলতা ও স্মস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তবে খাত সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে কিন্তু এই সেক্টরে ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে এবং নিজ দেশকেও ইতিবাচকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে এই সেক্টরের টেকসই উন্নয়ন ও ভবিষ্যতে সুফল প্রাপ্তির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমাদের দেশের সম্মানিত সরকারকে সহযোগিতার হাত আরো বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে শিল্পবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে সকলকে এক সাথে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে।
সিরাজুর রহমান (Sherazur Rahman), প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও লেখক, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ। sherazbd@gmail.com
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment