চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং চীনে তৈরি কভিড-১৯ ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত বা তৃতীয় ধাপে মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রথম টিকা গ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ সরকার এই টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে।
এই টিকার তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ব্যাচে স্থানীয় চীনা কমিউনিটির বহু প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান স্বেচ্ছায় টিকা গ্রহণ করবেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেব টিকা নিতে পারলে খুবই খুশি হবো।’
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ইয়ান হুয়ালং বলেন, ‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে চীনা রাষ্ট্রদূত হবেন টিকা গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি।’
রবিবার বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) মানব দেহে চীনের বেসরকারি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সাইনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেড উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ টিকার তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ‘নীতিগত অনুমোদন’ দিয়েছে।
বিএমআরসি চীনে তৈরি সাইনোভাক বায়োটেকের টিকার শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল চালানোর অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঢাকা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক উদারাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) এই টিকার ওপর গবেষণা চালাতে চেয়ে একটি গবেষণা প্রটোকল পেশ করেছে। এর প্রেক্ষিতে বিএমআরসি চীনের ভ্যাকসিনটির চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএমআরসি’র এক কর্মকর্তা বলেন, তারা এই টিকার সম্ভাবনা ও নিরাপত্তা সহ ‘বাংলাদেশের স্বার্থ’ বিবেচনা করে এই অনুমোদন দিয়েছে।
পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে বিএমআরসি’র এই অনুমোদনের পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিএজিএইচএস) ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে।
খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর এই ট্রায়াল শুরু করা যাবে বলে রোগ গবেষণা কেন্দ্রটির কর্মকর্তারা আশা করছেন।
আইসিডিডিআরবি প্রায় এক মাস আগে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রস্তাব দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি কোভিড-১৯ এর জন্য বিশেষায়িত আটটি প্রতিষ্ঠানে ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে চাইছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ডিএমসিএইচ) ইউনিট-১, ডিএমসিএইচ ইউনিট-২, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও হলি ফ্যামিটি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
বিএমআরসি কর্মকর্তারা বলেন, ২ হাজার ১শ’ ভলেন্টিয়ারের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। এছাড়াও, আরো ২ হাজার ১শ’ জন টিকা গ্রহণ ছাড়াই এই পুরো প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকবেন। ভ্যাকসিনটি ঠিকমত কাজ করছে কিনা তা নিরূপণে এরা অংশ নিবেন।
বেইজিং এর আগে এই ভ্যাকসিনটি বিশ্বের সব দেশে ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সাইনোভ্যাক এর আগে জানিয়েছিল, তারা একাই ১০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন উৎপাদনে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু টিকাটি সফল হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশ কবে নাগাদ তা ব্যবহার করতে পারবে তা স্পষ্ট নয়। কারণ চীনের জনসংখ্যাই প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন।