বিএনপি’র ক্রমাগত জঘন্য মিথ্যাচার ফৌজদারি অপরাধের শামিল’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার দুপুরে (১৮ মে) রাজধানীতে বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি’র সাম্প্রতিক নানা মন্তব্যের প্রতি সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি একথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, ‘করোনাদুর্যোগে মানুষের জীবনরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। করোনার মধ্যে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি। ৬ কোটির বেশি মানুষ আজ সরকারের ত্রাণ ও সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায়। পাশপাশি আরো ১ কোটির বেশি মানুষকে ত্রাণ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ত্রাণ কার্যক্রমে মানুষ খুশি। আর বিএনপি মাঝেমধ্যে ঢাকা ও আশেপাশে কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জে ফটোসেশন করে দুই-তিনশ’ মানুষেকে ত্রাণ দিতে গিয়ে বিষোদগার করছে। যারা জেগেও ঘুমায়, তাদের ঘুম ভাঙ্গানো যায় না। প্রকৃতপক্ষে সরকার যেভাবে এই পরিস্থিতিকে সামাল দিচ্ছে এতে বিএনপি প্রচন্ড হতাশ এবং সেই হতাশা থেকেই তারা এই বক্তব্যগুলো রাখছে।’
‘বিএনপি, বিশেষ করে তাদের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যেভাবে মিথ্যাচার করছেন, তার এই মিথ্যাচার ফৌজদারি অপরাধের শামিল’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘তার এই মিথ্যাচার নেশা না করেও নেশাগ্রস্ত মানুষ যেভাবে নেশায় বুঁদ হয়ে বকবক করে তার এই বক্তব্যগুলো ঠিক সেই রকম। আমি আশা করবো, ক্রমাগতভাবে এই মিথ্যাচারের রাজনীতি থেকে তারা বেরিয়ে আসবেন এবং এই রমজান মাসে দয়া করে এই মিথ্যাচারটা পরিহার করবেন।’
করোনায় বাংলাদেশ ও বিদেশের তুলনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, করোনা ভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাব যখন শুরু হয়, ইউরোপ- আমেরিকার সুপার মার্কেটগুলোতে তখন পণ্য শেষ হয়ে গিয়েছিল। মানুষকে ঘন্টার পর ঘন্টা সুপার মার্কেটের সামনে পণ্য কেনার জন্য লাইন ধরে দাঁড়াতে হয়েছে। বহু সুপার মার্কেটে গিয়েও কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়নি।’
ইউরোপ-আমেরিকায় শুরুতে মাস্কের সংকট ছিল, হোয়াইট হাউজের সামনে পিপিই’র জন্য বিক্ষোভ হয়েছে, আমেরিকার অন্যান্য জায়গাও পিপিই’র জন্য বিক্ষোভ হয়েছে, কিন্তু আমাদের দেশে নিত্যপণ্যের বাজারে সেই পরিস্থিতি হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নিত্যপণ্য এবং মাস্কের কোনো ঘাটতি আমাদের দেশে হয়নি, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে লক্ষ লক্ষ পিপিই বিতরণ করা হয়েছে এবং কয়েক লক্ষ পিপিই মজুদ আছে, জানান ড. হাছান।
ত্রাণ বিতরণ অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম ত্রাণ বিতরণে সব দলের মানুষকে আনা হয়েছে। যারা অন্য দল করে তারাও আছে, যারা আওয়ামী লীগকে গালি দেয় এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিষোদগার করে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তারাও এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের আওতায় এসেছে। ৬৪ হাজারের বেশি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধির মধ্যে দুর্নীতিতে ৫৫ জন অভিযুক্ত যা ০.০৮ শতাংশ অর্থাৎ ১ হাজারে ১ জনও নয়। ত্রাণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির ফলেই এরা শনাক্ত হয়েছে। অন্য কেউ নয়, সরকারি প্রশাসনই তাদের শনাক্ত করেছে, সরকারের পুলিশ এবং মন্ত্রণালয়ই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’
৫০ লাখ পরিবারকে এককালীন ২ হাজার ৫০০ টাকা নগদ পৌঁছার কার্যক্রম সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরির অবকাশ নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, ‘তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে তিন স্তরের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে এটি সরাসরি গ্রহীতার কাছে যাচ্ছে, কোনো মাধ্যমে না। জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ভোটার আইডি নম্বর, নাম, ঠিকানা, পিতার নাম ও মোবাইল নাম্বার না মিললে যাচ্ছে না। কেউ তালিকা দিলেই পাবেন, তা নয়, পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই করেই দেয়া হচ্ছে।’