সম্প্রতী দেশের বন্যা দুর্গত এলাকায় বিপাকে পড়া কোন মানুষের জন্য ত্রাণের যেন ঘাটতি না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
আজ ২০ জুলাই সোমবার সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠক সচিবালয়ের মন্ত্রী পরিষদ সভা কক্ষে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বৈঠক শেষে ব্রিফিং এ জানিয়েছেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বন্যা নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কি নির্দেশনা দিয়েছেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “কোনোভাবেই মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় এবং রিলিফের যেন কোনো ঘাটতি না হয়।
“বিশেষ করে নিচু এলাকা এবং চরে যারা থাকেন, তারা বাঁধের দিকে বা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসেন, স্কুলে চলে আসেন। সেখানে যেন তাদের জীবন বা খাবারের অসুবিধা না হয়। (আশ্রয়কেন্দ্রে) টয়লেট ফ্যাসিলিটি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট যেন থাকে।”
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য ও পঃ-পরিকল্পনা মন্ত্রণালিয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া আছে, ইউনিয়ন পর্যায়ে যারা কাজ করেন, মানুষের পাশে তাদের থাকতে হবে।
চলতি মৌসুমে তিন সপ্তাহের মধ্যে দুই দফা বন্যার মুখোমুখি হয়েছে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল। ১৮ জেলার নিম্নাঞ্চলে প্রায় ২৬ লাখ মানুষ দুর্গতিতে পড়েছে।
মাঠ প্রশাসন থেকে ত্রাণ সামগ্রীর চাহিদা পাঠানোর আগেই দুর্গতদের সহায়তায় সরকারের তরফ থেকে বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বলছে, করোনাভাইরাস সঙ্কটকালে বিতরণের পরও সরকারের হাতে যথেষ্ট ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে। চাহিদা পাওয়ার আগেই বন্যাক্রান্ত জেলাগুলোতে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। কোনো জেলা থেকে বাড়তি চাহিদা পেলে সঙ্গে সঙ্গে তা পাঠানো হবে।
গত ৪ জুলাই থেকে কয়েক ধাপে বন্যা, নদীভাঙন, পাহাড়ি ঢল, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা হিসেবে দিতে সারা দেশে ১৫ হাজার ২০০ মেট্রিকটন চাল, তিন কোটি ৩৯ লাখ নগদ টাকা এবং ৬২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
এছাড়া শিশু খাদ্য কিনতে ৫০ লাখ টাকা, গো-খাদ্য কিনতে ৫০ লাখ টাকা, ১০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ঘর মেরাতমতের জন্য আরও তিন লাখ টাকা রবাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
আনোয়ারুল বলেন, “আমরা আজকে দেখলাম পদ্মার পানি ১৬ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির স্পিডটা অনেক বেশি… পানির সঙ্গে পলি মাটি রয়েছে।
“উপর থেকে পানি এখন ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামছে। মন্ত্রিসভায় অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে যে, রিলিফ অপারেশন, রেসকিউ অপারেশন- এগুলো কীভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন মূলত যমুনা ও পদ্মা হয়ে পানি আসছে। সুনামগঞ্জ-সিলেটে মেঘনার পানি ছিল ঢলের মত, ৬-৭ দিনে নেমে গেছে।
ডিসি, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়ে প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরাও এটা রেগুলার মনিটর করছি।”