করোনা মোকাবেলায় আরো কঠোর পথে হাঁটছে সরকার। সপ্তাহখানেক আগে ঢাকার চারপাশের সাত জেলায় কঠোর বিধি-নিষেধের মাধ্যমে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর এবার সারা দেশে ফের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
আগামী বুধবার পর্যন্ত সীমিত পরিসরে কিছু প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে গতকাল রবিবার লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আরো ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ ঘোষণা আসবে বলে সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে বলেন, সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হলেও বৃহস্পতিবার থেকে তা পুরোপুরি কার্যকর হবে।
এই লকডাউনে পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে থাকবেন। ফলে সবার উচিত হবে তাঁদের সহাযোগিতা করা, যাতে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে রাখা যায়।
মন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হাসপাতালে যতই সক্ষমতা থাকুক তাতে কুলানো যাবে না। অর্থ-বাণিজ্যও ব্যাহত হবে। তাই সবাইকে এবারের লকডাউন ভালোভাবে পালন করতে হবে।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে সোমবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বন্ধ থাকবে সব ধরনের শপিং মল, মার্কেট, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র। তবে রাস্তার পাশের দোকান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের কাঁচাবাজার খোলা থাকবে।
খোলা থাকবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। বিমান স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও সরকারি-বেসরকারি অফিস পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়নি। এ সময়ে সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে সরকারি-বেসরকারি অফিস।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গতকালের আদেশ অনুযায়ী, গণপরিবহন চলাচল বন্ধের বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিয়মিত টহলের মাধ্যমে নিশ্চিত করবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (শুধু অনলাইন-টেক অ্যাওয়ে) করতে পারবে।
সরকারি-বেসরকারি অফিস ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুধু প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেওয়া করতে হবে। জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য আরো প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে সীমিত পরিসরের লকডাউনে ব্যাংকের লেনদেন চলবে আগের মতোই। বিদ্যমান সূচি অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত লেনদেন চলবে। আর আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
আগামী বুধবার পর্যন্ত এই নির্দেশনা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
সীমিত বিধি-নিষেধে আগামী বুধবার পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন আগের সময়সূচি অনুযায়ীই হবে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউনে সরকারি প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যাংকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।