জাতীয় তথ্য বাতায়নের (পোর্টাল) আওতাধীন ওয়েবসাইটের আদলে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে এর মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থার ভুয়া নিয়োগপত্র ইস্যু করে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে প্রতারক চক্র।
রবিবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রবিবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (এলএটিসি) ইলেকট্রিশিয়ান মো. রুহুল আমিন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন কে বা কারা তাঁকে ফোন করে জানায়, তাঁরসহ আরো তিনজনের নামে www.latcgovbd.com ওয়েবসাইটে নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়েছে।
পরে বিষয়টি প্রাথমিকভাবে খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানা যায়, ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (এলএটিসি) ওয়েবসাইটের আদলে একটি নকল সাইট তৈরি করেছে একটি প্রতারক চক্র।
এলএটিসির প্রকৃত ওয়েবসাইট (www.latc.gov.bd) নকল করে ভুয়া একটি ওয়েবসাইট (www.latcgovbd.com) সৃজন করে মো. রুহুল আমিনসহ আরো তিনজন কথিত ব্যক্তি মো. রায়হান রহমান, মো. আব্দুস সালাম ও মো. আরিফুল ইসলামের নামে গত ২১ জুন ভুয়া নিয়োগপত্র ইস্যু করেছে প্রতারক চক্র।
এলএটিসি থেকে মো. রায়হান রহমান, মো. আব্দুস সালাম ও মো. আরিফুল ইসলামের নামে এ ধরনের কোনো নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়নি।
বর্ণিত নিয়োগপত্রটি ভুয়া। ভুয়া সরকারি ওয়েবসাইট তৈরি, স্বাক্ষর জাল করা ও ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করা একটি গুরুতর ও দণ্ডনীয় ফৌজদারি অপরাধ।
এলএটিসি কার্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান মো. রুহুল আমিনকে গত ২১ জুন ৪৬২ নম্বর স্মারকে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়েছিল। তিনি বর্তমানে এলএটিসিতে কর্মরত। আপাতদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে, ভুয়া ওয়েবসাইট সৃষ্টিকারীরা এলএটিসির আসল ওয়েবসাইট থেকে উক্ত স্মারক ও নিয়োগপত্র সংগ্রহ করে এর একাংশ স্ক্যান করে ব্যবহার করেছে।
আরো প্রতীয়মান হচ্ছে, প্রতারক চক্র প্রকৃত নিয়োগপ্রাপ্ত মো. রুহুল আমিনসহ উপর্যুক্ত তিন ব্যক্তি (যদি নামও ভুয়া না হয়ে থাকে) থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল কিংবা করছে।
ইতিমধ্যে এলএটিসি ওয়েবসাইটের মূল পোর্টাল ডেভেলপার এটুআইকে ই-মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিটিসিএলকে পত্র লিখে ভুয়া সরকারি ওয়েবসাইট সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ তাদের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া নিউ মার্কেট থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
তৎক্ষণাৎ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার জন্য নাগরিকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। ভুয়া নিয়োগে বিভ্রান্ত না হয়ে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকবার সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, নকল ওয়েবসাইটটির ডোমেইনে নামের বানান ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওয়েবসাইটের নামের বানানের থেকে আলাদা। তবে খুব কাছাকাছি। ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকৃত ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস (www.latc.gov.bd), অন্যদিকে ভুয়া ওয়েবসাইটেরঅ্যাড্রেস (www.latcgovbd.com)।
লক্ষণীয়, ভুয়া ওয়েবসাইটের সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন latcgovbd এবং টপ লেভেল ডোমেইন .com, অন্যদিকে ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকৃত ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেসের সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন latc এবং টপ লেভেল ডোমেইন .gov.bd’, যা শুধু বাংলাদেশ সরকারের জন্য সংরক্ষিত।