‘পৃথিবীতে এখন আর একা একটি দেশ চলতে পারে না, অন্য দেশকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হয় এবং জীবন-জীবিকার জন্য অন্য ভাষা শেখারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু তাই বলে নিজের ভাষাকে ভুলে যাওয়া, বিস্মৃত হওয়া মোটেই ঠিক নয়।’
‘বিভিন্ন কাজকর্মে অনেককে ঘটনাক্রমে বিদেশে থাকতে হয়। কিন্তু, এই ভাষার মর্যাদা সবসময় আমাদের দিয়ে যেতে হবে। এই একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথানত না করা। একুশ শিখিয়েছে আত্মমর্যাদাবোধ। একুশের এই রক্তের অক্ষরেই লিখে রাখা হয়েছিল আগামী দিনে আমাদের স্বাধীনতা।’
‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। আমরা চাই এই গৌরবের ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন জানতে পারে।’
‘ভাষা আন্দোলন শুধু মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন ছিল না, পক্ষান্তরে এটা ছিল স্বাধিকার আদায়ের, স্বাধীনতার আন্দোলন।’
‘১৯৫২ সালের আন্দোলন কেবল ভাষা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, এ আন্দোলন ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।’
‘স্বাধীনতা, ভাষার অধিকার, সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে সমৃদ্ধ করা, চর্চা করা, এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদেরই কর্তব্য।’
‘আমরা অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে অর্জন করেছি, তার সুফল যেন আগামী প্রজন্ম ভোগ করতে পারে, তারা যেন একটা সুন্দর জীবন পায়, সেটাই আমরা চাই।’
‘আজকে যারা একুশে পদক পেয়েছেন, তারা আমাদের গুণীজন। তারা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কীর্তিমান। দেশ-জাতি-ভাষায় তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। সেই অবদানের কথা সবসময় আমরা স্মরণ করি।’
“দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম যাতে কেউ মুছতে না পারে; সে লক্ষ্য নিয়েই পাকিস্তানি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ‘সিক্রেট ডক্যুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ নামে মোট চৌদ্দ খণ্ডে বই প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বইটির চার খণ্ড ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। পঞ্চম খণ্ড প্রকাশ করা হচ্ছে। কারণ, আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস মানুষের জানা দরকার।’ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি বিরাট অংশ এখানে পাওয়া গেছে। আমরা দেখেছি, একটার পর একটা ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টা এ দেশে দীর্ঘদিন চলেছে, প্রায় একুশটি বছর। কাজেই আমি চেয়েছি সত্যটা মানুষের জানা দরকার।’
—— অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ‘একুশে পদক-২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।