চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে বৃহৎ শিল্প স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠান ইয়াবাং ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস গ্রুপ।
১০০ একর জমি ইজারা নিয়ে প্রায় ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে রপ্তানিমুখী শিল্প স্থাপন করতে চাইছেন এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী গতকাল সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছে সরকার। এটি গড়ে উঠেছে ৩০ হাজার একর জমির উপর।
পবন চৌধুরী বলেন, ইয়াবাংয়ের সঙ্গে গত একবছর ধরে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছিল। সম্প্রতি তারা চূড়ান্ত বিনিয়োগ পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। কোরবানির ঈদের পর তাদের সঙ্গে চুক্তি হবে এবং এরপরই শুরু হবে শিল্প স্থাপন।
চীনা কোম্পানিটির প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, “তারা বার্ষিক ইজারা মূল্যের (ভাড়া) ভিত্তিতে ১০০ একর জমিতে শিল্প স্থাপন করবে। সেখানে বিনিয়োগ করা হবে ৩০০ মিলিয়ন ডলার।
“বার্ষিক রফতানি লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১৪৬ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার। আর অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি হবে ৯৭ দশমিক ৬০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।”
এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে অন্তত ২২০০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করছেন পবন।
বেজার পক্ষ থেকে জানান হয়, ইয়াবাং ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস গ্রুপ চীনের ইয়াবাং গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। তারা ডাইং ও পেইন্টিং খাতের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই গ্রুপটি জিয়াংসু স্টক এক্সচেঞ্জের একটি তালিকাভুক্ত সংস্থা।
পিগমেন্ট, ফার্মাসিউটিক্যালস, ভেটেরিনারি ওষুধ, কীটনাশক, ফটোভোলটাইকস, মাইনিং, লজিস্টিক্স, ফিনান্স এবং আবাসন খাতে ইয়াবাং গ্রুপের বিনিয়োগ রয়েছে।
চীনের শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির একটি ইয়াবাং গ্রুপের বার্ষিক পরিচালন আয় ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশে ডাই এবং পেইন্ট, পিগমেন্ট, ফার্মাসিউটিক্যালস, ভেটেরিনারি ওষুধ, কীটনাশক, ফটোভোলটাইকসের মতো পণ্য তৈরি করবে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে ইয়াবাং গ্রুপের। প্রকল্পে উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ, আমেরিকায় রপ্তানি করবে তারা।
ইয়াবাং ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সমর্থনে বাস্তবায়ন পরিকল্পনার পাশাপাশি মাস্টার প্ল্যান জমা দিয়েছে। তারা প্রকল্পের পরিবেশগত সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাও জমা দিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে ইতোমধ্যেই ভারত, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগ শুরু করেছে। দেশের বড় শিল্পগ্রুপ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও সেখানে শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।