রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য বারবার ষড়যন্ত্র করা হয়। ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু জানতে পারেন, তাঁকে হত্যার জন্য পাকিস্তান থেকে আততায়ী পাঠানো হয়েছে। ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনী ক্যাম্পে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১৩ জুলাই মেজর ফারুক ও ১৯৭৩ সালের ১১ জুলাই কর্নেল রশিদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে অস্ত্র কিনতে চেয়েছিল। ১৯৭৪ সালের ১৩ মে উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তাদের নির্দেশে কর্নেল ফারুক শেখ মুজিব সরকারকে উৎখাতের জন্য আমেরিকার সাহায্য চেয়েছিল।
১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ আর্মড রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড ফারুক রহমান জিয়াউর রহমানকে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে বলেছিল। জিয়াউর রহমান তাতে রাজি না হলেও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেননি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াবহ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনাস্থ মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২০ উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকে বৈধতা দিতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পার্লামেন্টে আইন পাস করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খালেদা জিয়া সরকার ১২টি রাষ্ট্রের হাইকমিশনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সুখী, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তিনি সূচনা করে দিয়েছিলেন। আর সেটা বাস্তবায়ন করছেন তার রক্তের এবং আদর্শের উত্তরসূরি শেখ হাসিনা।
বর্তমানে বিশ্ব নেতৃত্ব বলছেন আধুনিক বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনা অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, ত্রিশ লাখ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের মাঝে আছেন।
ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ হতো যদি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে না আসতেন। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে না এলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ আর প্রতিষ্ঠিত হতো না। ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা থেকে রক্ষা করেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক মো. শেফাউল করিম, মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, চট্টগ্রাম-এর অধ্যক্ষ মাসুক হাসান আহমেদ, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ডা. মো. ইমরান হোসেন খান প্রমুখ।
জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবসহ অন্যান্যরা। আলোচনার সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং সভা শেষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।