শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো শিল্প কারখানা বন্ধ হবে না, আর বন্ধ সকল শিল্প কারখানা পুনরায় চালু করা হবে।
আমরা শ্রমিকদের স্বার্থ দেখি, কোনো শ্রমিকের চাকুরি যাবে না। কারখানা লাভজনক করতে কর্মকর্তা, শ্রমিক, কর্মচারি সকলকে কাজ করতে হবে। সিলেট সুনামগঞ্জের শিল্পায়নে সকলের কাজ করতে হবে।
শিল্পায়নের জন্য সুনামগঞ্জ অঞ্চলে অর্থনৈতিক জোন করা হবে। এ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করছে। এ অঞ্চলের শিল্প সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ শিল্পসমৃদ্ধ করতে হবে।
ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো: এহছানে এলাহীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ -৫, জনাব মহিবুর রহমান মানিক মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ -১ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন।
এতে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, এসপি মোঃ মিজানুর রহমান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই সিলেট সুনামগঞ্জ শিল্প প্রতিষ্ঠানে সমৃদ্ধ। সে কারণে দেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ এলাকায় শ্রমিকরা এসে কর্মসংস্থান পেয়েছে।
২০৪১ সালে শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত আয়ের দেশে উন্নতিতে সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলের শিল্প কারখানা গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ অবদান রাখবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার টেড্র ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নয়। শ্রমিক নেতাদেরও সাধারণ শ্রমিকদের ন্যায় কাজ করতে হবে।
শ্রমিক নেতারা কারখানার কোনো নিয়োগ বাণিজ্য না করার আহ্বান জানান। কোনা কর্মকর্তা ওভার টাইম না করে ওভার টাইম নিবেন না। প্রতিষ্ঠান/ কারখানার উন্নয়নে শ্রমিক নেতাদের আন্তরিক হয়ে কাজ করার অনুরোধ জানান।
১৯৯১ ও ২০০১ সালে সরকার ক্ষমতায় এসে সরকারি শিল্প কারখানা বন্ধ করেছে, ধ্বংস করে দিয়েছে দেশের শিল্প উন্নয়নের গতি ধারা। সব সময় আওয়ামী লীগ বন্ধ কারখানা চালু করে সচল রাখে দেশের অর্থনীতি, তৈরি করেছে ব্যাপক কর্মসংস্থান।
ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এর মাধ্যমেই সুনামগঞ্জের শিল্পায়ন শুরু হয়। তিনি বলেন, এই ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডই এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। তাই যে কোনো উপায় এই সিমেন্ট কোম্পানি বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না।
সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, বর্তমান সরকারের আমলেই সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলে শিল্পায়নসহ ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডকে লাভজনকভাবে বাচিয়ে রাখতে হবে। ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডই এ এলাকায় মানুষের জীবিকা এবং কর্মসংস্থান তৈরি করছে।
সভাপতি বক্তব্যে বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো: এহছানে এলাহীর বলেন, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড লাভজনক করতে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে মধ্যে শেষ করার আহ্বান জানান।
শিল্পমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এর আধুনিকায়নের নির্মাণ কাজের শেষে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এর কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীর সাথে মতবিনিময় সভা অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, এ প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে বিদ্যমান ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরের মাধ্যমে দৈনিক ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি নতুন জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্লিংকার কারখানা স্থাপিত হবে।
এর মাধ্যমে বিদ্যমান সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা ন্যূনতম ১৫ বছর ধরে রাখা সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৯০ কোটি টাকা।