বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে সারা দেশে সাত দিনের জন্য জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচল এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে কঠোর বিধি-নিষেধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। তবে এ সময়ে ব্যাংক খোলা থাকবে। এছাড়া জুন ক্লোজিংয়ের কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কিছু বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও খোলা থাকবে।
বুধবার (৩০ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যাংক খোলা থাকব। এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোকে জানানো হবে।’
এর আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, কঠোর ‘লকডাউনে’ জরুরি সেবা ছাড়া বন্ধ থাকবে সবকিছু। তবে অর্থবছর শেষ হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও হিসাব সংক্রান্ত কিছু অফিস সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হবে।
দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাতদিনের কঠোর কঠোর ‘লকডাউনে’ সব অফিস, যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস, যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাসজনিত রোগের (কভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিম্নোক্ত শর্তাবলী সংযুক্ত করে ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত নিম্নোক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো-
১. সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
২. সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহনসহ সকল প্রকার যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলও বন্ধ থাকবে।
৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
৪. সকল পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৫. জনসমাবেশ হয় এই ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
লকডাউন বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ের কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
এতে আরো বলা হয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনা-বিজিবি-পুলিশ-র্যাব ও আনসার নিয়োগ এবং টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেইসঙ্গে বিশেষ কোনও কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এই বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
মঙ্গলবার রাতে এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী কর্মরত ব্যক্তিরা ছাড়া এবং জরুরি কারণ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।