প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কভিড-১৯ পরবর্তী টেকসই এবং স্থিতিস্থাপক বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য পানি সম্পর্কিত বিপর্যয় নিরসনে শক্তিশালী অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, পরিস্কার সুপেয় পানির ক্রমবর্ধমান ঘাটতি, কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদির মতো রোগের প্রাদুর্ভাব আমাদের শান্তি ও বিকাশের জন্য পানির প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়।
পানি সংক্রান্ত ব্যাধি নিরসনে আমাদের আরো শক্তিশালী ও অন্তর্ভূক্তিমূলক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সৃষ্টি করার একটি সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে।
শুক্রবার ভাচর্য়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত ৫ম জাতিসংঘ পানি এবং বিপর্যয় সম্পর্কিত বিশেষ থিম্যাটিক অধিবেশনে পূর্বে ধারণকৃত ভাষণে একথা বলেন।
বিশ্ব এখন কভিড-১৯ এর জন্য আমাদের সময়ে সবচেয়ে ব্যাপক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যা প্রচুর অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিঘ্নের সৃষ্টি করছে এবং এর ফলে আমাদের টেকসই উন্নয়নের গতি হ্রাস পেয়েছে।
পানি সংক্রান্ত বিপর্যয় সমাধানে রাজনৈতিক ইচ্ছা ও সম্পদকে সংগঠিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সরকার ও অংশীদারদের সহায়তা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত পানি ও দুর্যোগ সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও নেতৃত্ব প্যানেল (এইচইএলপি) এই অধিবেশনটির আয়োজন করেছে।
গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা- এ তিনটি শক্তিশালী নদীর মোহনা অবস্থিত বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে নিচু নদী তীরবর্তী দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ পানি বিষয়ে দু’টি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার মুখোমুখি- পানির ঘাটতি এবং অধিক পানি প্রবাহ (বন্যা)। বর্ষায় ৯০ শতাংশ পানি সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের লোকালয়গুলো প্লাবিত করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। শুষ্ক মৌসুমে সারা দেশে খরার মতো পরিস্থিতি বিরাজ করে। তারওপর সমুদ্রের লবণাক্ত পানি উজানের দিকে ওঠে আসায় উপকূলে নিরাপদ সুপেয় পানির অভাব নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো বেশি স্থিতিস্থাপক এবং টেকসই কভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাওয়া’ শীর্ষক শিরোনামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাতে পানি এবং বিপর্যয় (এইচইএলপি) বিষয়ে হাঙ্গেরী, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ড, রিপাবলিক অব কোরিয়া, তাজিকিস্তান এর উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ এবং নেতৃবৃন্দ অংশ নিচ্ছেন এবং জাপানের ন্যাশনাল গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ (জিআরআইপিএস) এ অনুষ্ঠানের সহ আয়োজক।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে পানি সম্পর্কিত বিপর্যয় মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিবেচনার জন্য পাঁচটি প্রস্তাবও উত্থাপন করেন। তিনি তার প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, বিশ্বকে নিরাপদ পানির জন্য সমন্বিত, ফলদায়ক, মনোযোগী এবং অভিযোজিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টা এবং বিশেষ করে ভাল অনুশীলন, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।