স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ঠিক করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তিনি বলেছেন, এই স্বাস্থ্যের স্বাস্থ্য নিয়ে আমি অনেক আলোচনা করেছি।
স্বাস্থ্যখাতের ব্যবস্থাপনার যে অব্যবস্থাপনা তা দূর করতে না পারলে এখানকার ডাক্তার, লাইট, খাবার, নার্স, রোগীর সেবা কোনোকিছুই ঠিক হবে না। এখানে অব্যবস্থাপনা আছে। আমি সোচ্চারভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আবেদন জানাই এই অব্যবস্থাপনা যেন দূর করা হয়।
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত শেখ সায়েরা খাতুন হাসপাতালের বাতি কেনায় দুর্নীতি নিয়ে যমুনা টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদ নিয়ে তিনি বলেন, এই কেনাকাটা যারা অনুমোদন দিয়েছেন তাদের সবার নাম প্রকাশ করতে হবে। শুধু সচিব বা মন্ত্রী নয় সব পর্যায়ে যারা জড়িত তাদের নাম জাতির সামনে নিয়ে আসতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকা আরেক অতিথি বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভাগনের প্রতিষ্ঠান এসব বাতি সরবরাহ করেছে। এই ঘটনা সত্যি হলে তা খুবই দুঃখজনক।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণের উপর জোর দিয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, অনেক সুন্দর ব্যবস্থাপনা বাইরের দেশগুলোতে আছে। এখানে ডিসেন্ট্রালাইজ করা প্রয়োজন।
জায়গায় বসে যদি পুরো ব্যবস্থাপনা না করা যায় তবে অসঙ্গতি থাকাই স্বাভাবিক। সব যদি কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় তবে আমরা এসব সমস্যা দূর করা যাবে না। একজন ডিজি বা সচিবের পক্ষে দেশের সব জায়গায় কি হচ্ছে তা একই সময়ে জানা সম্ভব না।
এসময় তিনি বলেন, সংসদে স্বাস্থ্যখাতের ব্যবস্থাপনা কিভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে অন্তত একদিন দীর্ঘসময় সবার আলোচনা করা উচিত। এ ব্যাপারে প্রস্তাব রাখতে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে আগে থেকেই স্বাস্থ্যখাতের নানা দুর্নীতি-অনিয়মের ব্যাপারে সংসদে প্রতিবাদ জানিয়ে আসা বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু স্বাস্থ্যখাতের কয়েকটি অনিয়মের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এসবের বিচার হয় না বলেই এই খাতে অনিয়ম বাড়ছে।
তিনি বলেন, এই খাত নিয়ে কোনো আশা করে লাভ নেই। এখানে অনেক দুর্নীতি, অনিয়ম হয়। গণমাধ্যমে খবর এলে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তথ্য না দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। উপরের আশীর্বাদ আছে বলেই তারা এমন সাহস পায়।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যখাতের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সংবাদকর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানির নিন্দা জানান দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
এ সময় সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের খাবারের মান নিয়ে প্রতিবেদন করায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম নিয়ে ভবিষ্যতেও প্রতিবেদন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।