বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম নিষিদ্ধ করতে ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার।মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আগে বন্ধ করলে আজ মেজর সিনহাকে অকালে প্রাণ দিতে হতো না।
এ ধরনের কোনো ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হবে না এ ঘোষণা সরকারকেই দিতে হবে। মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে যে নির্মমতা প্রকাশ পেয়েছে তা এখনই প্রতিরোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে তা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
শনিবার এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান।
রাষ্ট্রবিদ্যমান থাকা অবস্থায় নাগরিকের জীবন রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্ত্রধারীর হাতে জিম্মি করে দেওয়া কোনোক্রমেই রাষ্ট্রের করণীয় হতে পারে না। সরকারের নির্দেশনার বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার এক্তিয়ার নেই।
কোনো হত্যাকাণ্ড যখন আর ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ থাকে না তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে না কাউকে ব্যক্তিগতভাবে দোষী করে বা অভিযুক্ত করে বা শাস্তি দিয়েই সরকার নিজের পাপ থেকে মুক্তি পেতে চায়, যা আইনগত ও নৈতিকতা পরিপন্থী।
রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে প্রায় দেড় দশক ধরে। সরকারের অঘোষিত এ ধরনের নীতির কারণে বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রশ্নটিই এক নাম্বারে এজেন্ডা হয়ে উঠে এসেছে। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন সম্ভাবনাময় স্বপ্নচারী তরুণ মেজর সিনহাকে গুলি করে হত্যার মধ্য দিয়ে এ বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
সরকারি কর্মচারী সরকারি ইউনিফর্ম পরে সরকারি অস্ত্র ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে তাকে যেমন অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে তেমনি সরকারকেও তার দায় বহন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ব্যক্তি বিশেষকে শাস্তি দিয়ে নাগরিকের জীবন সুরক্ষার মৌলিক কর্তব্য থেকে রাষ্ট্র বিমুক্ত হতে পারে না।
১. বিচারবহির্ভূত হত্যা’ ও ‘গুম’ নিষিদ্ধ করা.
২. যাবৎ সংঘটিত সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা করা এবং সুষ্ঠু স্বচ্ছ বিচারের আওতায় এনে অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা.
৩.উপনিবেশিক পুলিশি আইন ও ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে স্বাধীন দেশের উপযোগী করার লক্ষ্যে ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠন করা.
৪.রাষ্ট্রীয় সকল অস্ত্রধারী প্রতিষ্ঠানকে সাংবিধানিক শৃঙ্খলায় রাখা এবং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে সাংবিধানিক শাসনের আনুগত্য নিশ্চিত করা।
অবিলম্বে চার দফা বাস্তবায়ন করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।