করোনার নমুনা সংগ্রহের বৈধ অনুমতি পাওয়ার পরও টাকার লোভে ভুয়া টেস্ট শুরু করেছিল জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার (জেকেজি)। প্রতিষ্ঠানটি করোনার ১৫ হাজার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরী এবং চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চলেছিল এমন অপকর্ম। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তারা এটি স্বীকার করেছেন। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে এই দম্পতি বলেন, সম্প্রতি ৩০০ কোটি টাকার কাজ দিতে চেয়েছিলেন একজন আমলা। ঐ টাকার ভাগ কে কত পাবে বৈঠকে তাও চূড়ান্ত হয়। সম্প্রতি ঐ আমলা বদলি হয়ে গেছেন।
রবিবার বিকালে আরিফ ও তার ভগ্নিপতি সাঈদ চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হয়। পুনরায় রিমান্ড আবেদন না থাকায় তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। আরিফ ও সাঈদকে জেল হাজাতে পাঠানোর আবেদনের বিরোধিতা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। তাদের আবেদন খারিজ করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ আদালতে পাঠানো হবে। গতকাল রবিবার ছিল তার দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ডের শেষ দিন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানিয়ে আজ আদালতে পাঠানো হবে। আবারও তার রিমান্ড চাওয়া হতে পারে।
সাবরিনা-আরিফ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সমানতালে ম্যানেজ করতেন। তবে অপকর্ম ফাঁস হওয়ার পর গ্রেফতার হয়ে আরিফ-সাবরিনা এখন ডিবির হেফাজতে রয়েছেন। সেখানে গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসছে তাদের অপকর্মের নানা তথ্য। রিমান্ডে আরিফ ও সাবরিনা স্বীকার করেছেন, করোনার ভুয়া টেস্ট ও ভুয়া সনদ বিক্রি করে তারা কয়েক কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। টাকার অঙ্ক সম্পর্কে অবশ্য তারা একেক সময়ে একেক তথ্য দিচ্ছেন। তবে দুই জনই স্বীকার করেছেন। সন্দেহ এড়াতে টাকাগুলো তারা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখেননি। জেকেজির কর্মীদের খরচ মিটিয়ে অন্তত সাড়ে ৩ কোটি টাকা নগদ আকারে পূর্বপরিচিত কয়েক জনের কাছে রেখেছেন তারা। টাকার ভাগ নিয়ে মূলত সাবরিনা ও আরিফের মধ্যে দ্বন্দ্ব। বেশি টাকা নিয়ে নেন আরিফ।
করোনা পরীক্ষার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৩ জুন জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির ছয় কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গত ১২ জুলাই জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনাকে গ্রেফতার করা হয়।