সাম্প্রতিক শিরোনাম

অনেকে মুখে বললেও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না

রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আমার মনে আছে ১৯৬৬ সনে আমি যখন কারাগারে আমাকে তিনমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

মোনায়েম খান আমাকে ডিভিশন দিলেন। আমার বাবা তখন স্পিকার। আমি তখন ডাকসুর ভিপি। মাত্র লেখাপড়া শেষ হয়েছে। সেই শীতের রাতে ঘটি-বাটি কম্বল জেল খানার সম্বল।

প্রচন্ড শীতে দেখলাম চাল চলে এসছে, ডিম চলে এসছে। কে পাঠিয়েছে? আমাদের উল্টোদিকের দেওয়ারিতে বঙ্গবন্ধু পাঠিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু তিনি তার লেপ এবং বালিশ তাও পাঠিয়ে দিয়েছেন। একমাস ছিলাম।

সেই সময় ঈদ ছিল। কারাগারের মধ্যে তাঁর সাথে ঈদ কাটিয়েছি। তাঁর কারাগারের রোচনামচায় তা উল্লেখ আছে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সরকারী দল আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ, শাহাজান খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মীর্জা আজম, নূরুল ইসলাম নাহিদ এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মো. ফখরুল ইমাম।

ওয়ার্কার্স পার্টিও সভাপতি বলেন, একইভাবে ১৯৬৭ সালে যখন আমরা জেলে গেলাম তখন আমি রুমে ছিলাম, বঙ্গবন্ধু দেওয়ানীতে ছিলেন। সেই সময় রটে গিয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হবে।

জেলখানায় ইতিমধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামীদের কামালউদ্দিন, সিকদারউদ্দিন ইত্যাদিদের জেলে নিয়ে আসা হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু ও আমার আর একটি মামলা ছিলো। আমাকে প্রায় প্রতিদিন বাইরে কোটে যেতে হতো। বঙ্গবন্ধু যিনি ছিলেন জেলের রাজা।

তাকে কেউ আটকাতে পারতো না। তখন তিনি ওই গেটে এসে দাঁড়াতেন, আমাকে দিয়ে খবর পাঠাতেন। বাইরের খবর নিতেন। একথাটা আমি স্মরণ করছি এই কারণে যে, বঙ্গবন্ধু ওই সংকটকালে আমাকে বিশ্বাস করেছিলেন।

আমার মনে আছে, ঈদের দিন তিনি আমার কাঁধে হাত রেখে ঈদের মাঠে গেলেন। তিনি যেতে যেতে আমাকে বললেন, দেখ মেনন ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। ওরা ষড়যন্ত্র করছে, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু আমি মাথানত করবো না।

তার কিছুদিন পরেই ১৭ জানুয়ারি তাঁকে নেওয়া হলো ক্যান্টনমেন্টে, জেলখানায় আর রাখা হলো না। বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতাই বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের স্বপ্ন ছিলো বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতা ও যুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যার জন্য ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।

কারণ হত্যাকারীরা জানতো বঙ্গবন্ধু’র রক্ত যদি ছিটে ফোটাও বেঁচে থাকে তাহলে বাঙ্গালী জাতি আবারো তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হবে। বাস্তবে সেটাই হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি আবারো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তার নেতৃত্বেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতীয় পার্টির মো. ফখরুল ইমাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর কখনো মৃত্যু হয় না। বঙ্গবন্ধু কখনো হারিয়ে যায় না। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে খুনীরা তাঁর আদর্শকে বিলুপ্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ আজও আমাদের পথ দেখাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের কান্ডারি।

তাঁর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তার নেতৃত্বে দ্রুতই আমরা উন্নত দেশে পরিণত হবো বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বলেন, পৃথিবীতে অনেক নেতা আছে, অনেক মানুষ আছে যাদের মৃত্যু হয় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মৃত্যুবরণ করেন নাই তিনি আছেন এবং তিনি চিরদিন থাকবেন।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে তোমরা আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছ, যদি কোন দিন পারি নিজের রক্ত দিয়ে সেই রক্তের ঋণ শোধ করে দিয়ে যাব।

তিনি একাই রক্ত দেননি সপরিবারে রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতির রক্তের ঋণ শোধ করে গেছেন। এখন তারই কন্যা সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, অনেকে মুখে বললেও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা বাস্তবায়নে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক পরিশ্রম করলেও সকলের সহযোগিতা ছাড়া এই চেতনা বাস্তবায়ন অসম্ভব। তাই জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ-২০২০) উপলক্ষে গত রবিবার জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে এই অধিবেশনে গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

পরে সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। আগামী বৃহস্পতিবার এই আলোচনা সমাপ্ত হবে।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...