সাম্প্রতিক শিরোনাম

বুনো পাখি ও প্রকৃতি পরিবেশ সংরক্ষণে ভালবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন

বুনো পাখি ও প্রকৃতি পরিবেশ সংরক্ষণে ভালবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের তরুণ এক যুবক আহম্মদ উল-াহ এবং তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা (ন্যাচার এন্ড এনভায়রনমেন্ট প্রিজারভেশন অর্গানাইজেশন- নিপো)।

দেশীয় স্থিতু পাখিদের সংরক্ষণ পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই ব্যতিক্রমী সে এবং তার গড়া সংগঠনটি এ কাজে নিবেদিত হয়েছে। এদের উদ্যোগেই গোবিন্দগঞ্জের দরবস্ত, তালুককানুুপুর, কোচাশহর ইউনিয়নসহ গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পাখি এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে নিবেদিতভাবে কাজের সুত্রপাত করে এই সংস্থাটি ও নিবেদিত প্রাণ ৩৫ তরুণের একটি দল।

২০০১ সাল থেকে শুরু করে আহমেদ উল¬াহর নেতৃত্বে এই সংস্থার তরুণরা স্বেচ্ছাশ্রমে প্রশংসনীয় অন্যতম যে কাজগুলো করেছেন সেগুলো- দুইটি বিরল প্রজাতির আহত হুতুম ছানাকে সুস্থ করে তোলা।

এছাড়া তালুক কানুপুর ইউনিয়নে রাঘবপুর গ্রামে ভাঙ্গা রাস্তায় বাঁশের সাঁকো নির্মাণ, ঝড়ের মধ্যে মাটিতে পড়ে যাওয়া বিরল প্রজাতির চিল ছানাকে ছোট থেকে বড় করে অবমুক্ত করা, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রকৃতি পরিবেশ সংরক্ষনে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কুইজ প্রতিযোগীতা, ধানের জমিতে পাখির দ্বারা পোকা মাকড় দমনের জন্য কঞ্চি পোতা অভিযান, রাঘবপুর গ্রামে একজন অতিদরিদ্র ব্যক্তির ঘর নির্মাণ করে দেয়া, ভ্রাম্যমাণ রাস্তা সংস্কার কর্মসূচী।

এছাড়াও নাটোর জেলার রাজবাড়ীতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক অভিযান, বিভিন্ন পাখিদের জন্য মাটির হাঁড়ি ও কলসের নিরাপদ বাসা নির্মাণ এবং অসুস্থ ও বাসা থেকে পড়ে যাওয়া পাখিদের রক্ষা করে অবমুক্ত করা অন্যতম। এছাড়াও সম্প্রতি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা দরবস্ত ইউপি মাড়িয়া গ্রাম থেকে বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার করে বন্যপ্রানী সংরক্ষন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে আহমেদ উল্য¬াহ।

পাখির জন্য অনন্য ভালবাসা থেকে মাদ্রাসায় পড়–য়া ছাত্র আহম্মদ উল¬াহ নিজের সীমিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নিজ গ্রামে পাখিদের বাসা তৈরী করার মাধ্যমেই সুচনা করে তার পাখি সংরক্ষণ কর্মসূচী। কেননা, সাম্প্রতিক সময়ে অবাধ বৃক্ষ নিধনের কারণে পাখিরা তাদের নিরাপদ আবাসস্থল হারিয়েছে এবং খাদ্য সংকটের কবলে পড়েছে। ফলে পাখিদের স্বাভাবিক প্রজনন বিঘিœত হচ্ছে।

এছাড়া গ্রামগঞ্জের নতুন প্রজন্মের মানুষ পাখিদের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীল না হওয়ায় ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছে পাখিরা। এছাড়া ফসল উৎপাদনে বিষাক্ত কীটনাশকের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাখিদের মৃত্যুর হারও বেড়েছে।

এই প্রতিকূল অবস্থা থেকে পাখিদের রক্ষায় তাই এগিয়ে এসেছে নিপো এবং তার সদস্যরা। শুরুতেই তালুককানুপুর ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী সমসপাড়া, ফকিরপাড়া, কবিরাজপাড়া, কাপাসিয়া, ছোট নাগবাড়ি গ্রামে তারা তাদের কার্যক্রমের সুত্রপাত ঘটায়। এভাবে ২০১০ সাল পর্যন্ত নিজ খরচে এসব গ্রামে দু’হাজার কলস স্থাপন করা হয়।

বিশেষ করে অবাধ বৃক্ষ নিধনের কারণে পাখিরা এখন বাসা বানিয়ে প্রজনন করার মত নিরাপদ গাছ পাচ্ছে না। তদুপরি পাখি শিকার বন্ধ না হওয়ায় নানা প্রজাতির দেশীয় পাখি ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গাছে মাটির হাঁড়ি, কলস স্থাপন ও গাছের শাখায় কৃত্রিম গর্ত করে দিয়ে ছোট ছোট মাটির পাতিল বসিয়ে প্রায় ৫ হাজার পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে বলে আহমেদ উল¬াহ জানান।

পাখিদের হত্যা বন্ধ, তাদের নির্মাণ করে দেয়া ছাড়াও পরিবেশের উন্নয়ন ও সংরক্ষণে এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন কাজ করে চলেছে। তাদের উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হলো- শিক্ষা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম, সামাজিক বনায়ন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষন, খাল-বিল ডোবায় প্রাকৃতিক পরিবেশে মৎস্য চাষ, স্বাস্থ্য সেবাসহ অন্যান্য জনসেবামূলক কাজ, ছোট পরিবার গঠনে গ্রামের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা এবং পরিবেশ সংরক্ষনে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন। এদের মধ্যে অন্যতম হলো- স্বেচ্ছায় বৃক্ষরোপন, পানি ও নদী দূষণ রোধ ও স্যানিটারী পায়খানা ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে তোলার কাজে স্বত:স্ফুর্তভাবে এগিয়ে যাওয়া।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন স্বচোখে তাদের পাখি ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রম দেখার জন্য গোবিন্দগঞ্জে এসেছেন। তাদের উৎসাহে ইতোমধ্যে গোবিন্দগঞ্জ থেকে নিপো তাদের কার্যক্রম গাইবান্ধা জেলার বাইরেও বগুড়া, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, জয়পুরহাট এবং গাজীপুর, রংপুর জেলায় সম্প্রসারিত করেছে।

এসমস্ত উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য এই পরিবেশবাদী সংস্থা নিপো এবং আহমেদ উল¬াহ রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশক পদক, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় পরিবেশ সংরক্ষণ সনদপত্র, জাতীয় পরিবেশ স্বর্ণ পদক ও সনদপত্র এবং জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড সহ একাধিক পদক ও সনদপত্র পেয়েছে।

উত্তরপাড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আলা উদ্দিন মিয়া ও গৃহবধূ খুরশিদা বেগমের ছেলে আহম্মদ উল¬াহ ইতিমধ্যে তার এই কাজের জন্য শুধু নিজ গ্রামেই নয়, গোটা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাতেই এখন অতি পরিচিত একটি নাম। আহম্মদ উল¬াহ ও তার সংগঠন নিপো এবং নিপোর নিবেদিত সদস্যদের শুধু একটিই চাওয়া বনাঞ্চল ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এবং বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় পাখি প্রাণীদের সংরক্ষণে সকলে এগিয়ে আসা ও জনসচেনতা সৃষ্টি।

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...