এপ্রিলের ০১ তারিখ আক্রান্ত ছিল মাত্র ৫৪ জন । ২১ এপ্রিল নাগাদ এখন সেটা ৩৪০০ ছুই ছুই । মানে মাত্র ২১ দিনে ৫৪ থেকে সংখ্যাটা ৩৪০০ হয়ে গেছে ৬২ গুন বৃদ্ধি পেয়ে । লকডাউন কেউ মানছে না । মানুষ অসচেতন ছিল, আছে এবং থাকবে । বাজারে ভীড়, চায়ের দোকানে ভীড়, কিছু মসজিদে এখনো ভীড়, তবে মসজিদ ছাড়াই এখন বাসার ছাদে জামাতের সহিত নামাজ আদায় হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ!!
যাহোক, এতদিনে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে কোনভাবেই লকডাউন কেউ মানবে না । লকডাউন কার্যকরী করতে যদি এখন গুলি চালায়, বুটের লাথি দেয়া হয় তখন মানবদরদী অনেক দেখা যেত । কিন্তু বাস্তবতা হল এই লকডাউন আমরা মাত্র ১৪ দিন রাখতে পারতাম সবাই মেনে চললে । কেউ মানেনি । মানছেনা । এতে গরীবদের বাসায় থাকাও এখন অসম্ভব হয়ে পড়ছে । মাসের পর মাস আপনি এভাবে থাকতে পারলেও তারা পারবে না । আর যেহেতু এর দ্বারা কোন লাভ হচ্ছে না তাই এখন আমাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নিতে হবে ।
লকডাউন কি আমরা দীর্ঘ করব??
দীর্ঘ করা যেত যদি মানুষ সচেতন হত । যেহেতু আমাদের দেশের মানুষের অর্ধেকের বেশি বিশ্বাস করেন ছোয়াচে রোগ নেই, তাই তাদের বাজারে যেতেও সমস্যা নেই, আড্ডা দিতেও সমস্যা নেই । কোন ভাবেই লকডাউন তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারবে না । তাহলে আমরা কি করব?
দুর্ভিক্ষ সারাবিশ্বে কড়া নাড়ছে । লকডাউন যত বাড়বে অর্থনীতি তত ভেঙ্গে পড়তে থাকবে । পরিনাম ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ । প্রচুর মানুষ নি:স্ব হয়ে যাবে । চুরি, খুন, ডাকাতি বেড়ে যাবে । সব অর্জন শেষ হয়ে যাবে ।
এখন প্রশ্ন হল অর্থনীতি বাচাতে গেলে লকডাউন তুলে নিতে হবে । এখন সেটা করলে দেশে কমপক্ষে ৫ কোটি আক্রান্ত হবে । ২০ লক্ষ মানুষ মরবে ।
কিন্তু মানুষ মরবেই । আর আপনি আমি সামান্য লকডাউনে ঘরে থাকার কথায় মানুষকে বুঝাতে পারছিনা । তাই পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে যে হয় করোনাতে মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখব । অথবা দুর্ভিক্ষে মানুষ মরতে দেখব । চুরি, খুন, ছিনতাই দেখব ।
এই দুই পরিস্থিতির বাইরে আপাতত বিকল্প কোন দিক দেখছি না । যেহেতু লকডাউন সফল হবে না, সফল করা যাবে না ( আপনি গুলি করলেও কাউকে ঘরে আর আটকিয়ে রাখতে পারবেন না) তাই “Let them die” would be the best option for the time being.
তবে করোনায় মৃত্যু ঝুকি কমাতে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার । এর মধ্যে অন্যতম হল, যারা ছোয়াচে রোগ নেই বলে প্রচার করেছে এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে । এদেরকে যাবতীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে । যত চাল চোর, তেল চোর, আর টেবিলের নিচ দিয়ে উপহার নেওয়া ব্যক্তি আছে এদের সবাইকে চিকিৎসা সেবা দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।
এখন অর্থনীতি বাচুক । ২০ লক্ষ মরুক । না মরার আগ পর্যন্ত কারো হুশ হয়না । মনে রাখবেন অকার্যকর লকডাউনের পরিনতি হবে অকার্যকর অর্থনীতি। লকডাউনেও কাজ হবেনা আবার অর্থনীতিও শেষ হবে। দুটি মিলিয়ে অবস্থা আরো খারাপ হবে। অন্তত লকডাউন তুলে দিয়ে এই জাতের কিছু কে মরতে দিয়ে অর্থনীতির যদি উপকার হয় আর কি।
মতামতঃ নীলাভ, কলামিস্ট।