সাম্প্রতিক শিরোনাম

এমনটা কেনো করলেন এ. আর রহমান?

হিরো আলম রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়ার পর সারা দেশে হইচই শুরু হয়ে যায়। এমনকি ওই প্রতিবাদের সংবাদ পশ্চিমা গণমাধ্যমেও প্রচার পায় জোরালোভাবে। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যে এটা নিয়ে মাতামাতি চলতে থাকে ক্রমাগত অনেকদিন। কারণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ভুলভালভাবে গাওয়া অনুচিত।

রবীন্দ্রনাথের গান শুনতে যতোটা হৃদয়গ্রাহী এবং শ্রুতিমধুর ওটা কণ্ঠে তুলে সঠিকভাবে পরিবেশন করা ওতোটা সহজ নয়। কারণ, তাঁর গানের সুরের ভেতর সূক্ষ্ম রাগরাগিণীর গভীর উপস্থিতি আছে যা শুধুমাত্র যাঁরা রবীন্দ্রসঙ্গীত সাধনার কিংবা এই বিষয় নিয়ে গবেষণায় মগ্ন তাঁরাই বুঝতে পারেন।

ভারতের যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আছেন, আমাদেরও আছেন জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম – দ্রোহের কবি, প্রেমের কবি, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের হৃদয়ের ভাষা অনুধাবন করা কবি। কাজী নজরুল ইসলামের গান বিকৃত করে অস্কার জয়ী ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক এবার বাঙালিদের আবেগের কাঠগড়ায়।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কিংবা আমাদের বাসার গ্রামোফোনে যখনই ‘কারার ওই লৌহকপাট’ গানটা বেজে উঠতো, তখন আমার শিশুমনেও জাদুকরী এক ভাব জেগে উঠতো। একারণেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে ওই রণসঙ্গীত মিশে আছে আষ্টেপিষ্টে। এই গানের প্রতি সামান্যতম অশ্রদ্ধা কিংবা অবহেলা আমরা অবশ্যই মেনে নিতে পারিনা।

খ্যাতিমান সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান সম্প্রতি আমাদের জাতীয় এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের রণসঙ্গীত “কারার ঐ লৌহকপাট” গানটি একটা চলচ্চিত্রের জন্যে তৈরী করেছেন। গানটা আমি কয়েকবার শুনলাম। সঙ্গীত সম্পর্কে আমার তেমন একটা ধারণা না থাকলেও প্রথমেই গানটার শুরুতে উটকো বাঁশির আওয়াজ শুনেই বিরক্ত লাগলো। বাঁশী যদি রণসঙ্গীতে সংযোজন করতে হয় তাহলে এক্ষেত্রে অন্য ধরনের বাঁশির ব্যবহার আবশ্যক। কিন্তু এ আর রহমান এটা করেননি। তারপর শুধুই “কারার ঐ লৌহকপাট” এই অংশটুকু মোটামুটি সহনীয়ভাবে উপস্থাপনের পর পুরো গানটা তিনি কবিতা নাকি সংলাপ নাকি পাগলের আর্তচিৎকার হিসেবে উপস্থাপন করেছেন এটা আমি বুঝে উঠতে পারিনি। খুবই বিরক্ত লেগেছে।

আমাদের জাতীয় এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান নিয়ে এধরনের মশকরা করার সাহস তিনি পেলেন কোত্থেকে? তিনি এটা করে বিশ্বের কোটিকোটি নজরুল প্রেমীর হৃদয়ে চাকু চালিয়েছেন। বাংলাদেশের জাতীয় কবির প্রতি চূড়ান্ত বেয়াদবি করেছেন। পাশাপাশি সঙ্গীতপ্রেমী সব মানুষের মনে আঘাত দিয়েছেন। এমন কাজ যদি তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে করতেন তাহলে এতোক্ষণে ওনাকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হতো। ভারতজুড়ে তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়ে যেতো আন্দোলন। বাংলাদেশেও রবীন্দ্র প্রেমীরা বিবৃতি দিয়ে, পত্র-পত্রিকায় কলাম লিখে এর প্রতিবাদ জানাতেন। অর্থাৎ একটা ঝড়ের সূচনা হতো।

কিন্তু আমাদের জাতীয় এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের রণসঙ্গীত নিয়ে বাজে ধরনের মশকরা করার পরও এ আর রহমানের বিরুদ্ধে কাঙ্ক্ষিত প্রতিবাদ নেই, বিবৃতির ঝড় নেই, সমাজের কথিত সুশীলদের মুখেও রা নেই। এমনকি নজরুল ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকেও কোনো বিবৃতি দেয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। কারণটা কি?

নজরুল আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কবি ছিলেন, সমাজের এলিট শ্রেণী তাঁকে ঠিক হৃদয় থেকে আপন ভাবেনা এজন্যেই কি? আজ ওস্তাদ সোহরাব হোসেন, ফিরোজা বেগম, বারিন মজুমদার বেঁচে থাকলে কঠিন প্রতিবাদ করতেন। ওনাদের বাইরেও তো এই বাংলাদেশেই এখনও বহু নজরুল বিশারদ আছেন, নজরুল সঙ্গীতের সাধক আছেন। ওনারা এখনও মুখে কুলুপ এঁটে আছেন কেনো? নাকি এ আর রহমান যেহেতু জগৎবিখ্যাত তাই ওনার সব কাজ হালাল আর হিরো আলম যেহেতু একজন সাধারণ মানুষ তাই সব দোষ ওই নন্দ ঘোষের? দুর্বল বলেই একজন হিরো আলমকে নিয়ে শুধুমাত্র রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়ার চেষ্টা করার “অপরাধে” তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা হয়ে গেলো অথচ এ আর রহমানের দিকে আঙ্গুল তোলার সাহসটাও দেখছি অনেকের নেই।

এই সমাজের আমি রথিমহারথী নই, বিশিষ্টজনও নই। একারণেই আমি আমাদের জাতীয় এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের রণসঙ্গীত নিয়ে এ আর রহমানের চরম বেয়াদবির প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি লিখলাম এটা নিয়ে সুশীলদের মাঝে কোনো প্রতিক্রিয়া হবেনা, পত্রিকার পাতায় এনিয়ে এক কলমও কেউ লিখবেনা। তারপরও একজন সঙ্গীতপ্রেমী হিসেবে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ আর রহমান যেনো এধরনের ইতরসুলভ আচরণের জন্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে ওনার ওই ফাজলামোটা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেন এ দাবীও জানাচ্ছি।

(লেখক শমিত জামান ঈশ্বরদী পাবনা ফোন ০১৭১০৮৬৬১৩১)

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...