সাম্প্রতিক শিরোনাম

বাংলাদেশের গণমানুষের গণতন্ত্র

আমি বাংলাদেশে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না। এই বিশ্বাস আগে ছিল। এখন উঠে গেছে। এদেশের মানুষ জনের ফেসবুকের কমেন্ট এবং বাস্তব জীবনের মূল্যায়ন দেখে আমার এই বিশ্বাস জন্মেছে যে আর যাই হোক এদের হাতে ভোটের ক্ষমতা দেয়া উচিত না। এরা বুঝেনা এক লাইন ও। বক্তব্যের ব্যাপারে কেউ কম যায় না।
কিছু উদাহরণ দেই। এই ধরেন পায়রা সেতু নির্মান হচ্ছে, কমেন্টে যেয়ে দেখবেন যে মানুষ খেতে পায়না সেতু দিয়ে কি হবে? মনে করুন স্যাটেলাইট পাঠানোর একটি প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে, এদের মন্তব্য স্যাটেলাইট যে গেছে কেউ চোখে দেখেছে? এসব নাটক সবাই বুঝে।
মনে করেন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোন পলিসি নির্ধারণের প্রশ্ন। এরা পলিসির কিছুই না বুঝে এমন মন্তব্য করবে যে আল্লাহর কাছে দোয়া করে এদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া ছাড়া উপায় নাই। ধরুন রোহিঙ্গা ইস্যু। রোহিঙ্গাদের যখন ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছিল তখন মন্তব্যের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে মুসলিম ভাই হিসাবে আমাদের দায়িত্ব পালন করা উচিত। ওমুক বোন তার স্বামীকে বলেছে রোহিঙ্গা বোন বিয়ে করে নিজ ঘরে আশ্রয় দিতে। অথবা নাস্তিক সরকার, ইসলামের শত্রু বাংলাদেশ আজ রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয় না দিয়ে তাদেরকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলে উঠে বার্মা এটাক কেন করে না বাংলাদেশ। এটাক করে দখল করে নিলেই তো পারে।
আবার যখন রোহিঙ্গা দের আশ্রয় দেয়া হল এই পাব্লিক গুলাই আবার সুর চেঞ্জ করে রোহিঙ্গাদের কেন খেদিয়ে দেয়া হচ্ছে না সেটা নিয়ে মহা চিন্তিত। বাংলাদেশের গণমানুষ বলতে যারা বুঝায় এদের কেউ গভীর ভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা নাই।
এদেরকে যদি ক্ষমতায় আনা হয় হয়ত প্রথম দিনেই বার্মার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে। এরপর যখন দেখবে যুদ্ধ আর PUBG গেম এক জিনিস না। এখানে লাইফ পাওয়া যায় না। যুদ্ধের খরচে চালের দাম ৩০০ টাকা কেজি, তখন ওই লোক গুলি যারা যুদ্ধ করার পক্ষে ছিল তারাই সরকার কে উৎখাত করার জন্য মাঠে নামবে। এদের প্রধান সমস্যা এরা কোন সমস্যা নিয়ে ভাবে না। হুজগে চলে। হুজগ কেটে গেলে আবার কোন দিকে মোড় নেয় এরা নিজেরাও ঠিক জানে না।
গণ তন্ত্র যদি এসব মানুষের বুদ্ধির সাথে একজন সুস্থ মানুষের বুদ্ধিকে এক পাল্লায় বিচার করে তাহলে বলতে বাধ্য হচ্ছি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খুব খারাপ। কারন এদের ও ভোটের ক্ষমতা একটা, একজন শিক্ষিত মানুষের ও একটা। পার্থক্য হল দেশে এই সব আবাল শ্রেণির সংখ্যা শিক্ষিত মানুষ হতে অনেক বেশি।
আবার কিছু শ্রেনীর আবাল আছ্র যারা পাকিস্তানের সুইজ ব্যাংকে কত টাকা আছে এটা গর্ব করে বুক উচিয়ে বলে বেড়ায়ম কিন্তু বাংলাদেশের টাকা পাচার হওয়া নিয়ে তখন শুরু করে দেয় হৈ হুল্লোড়। এদেশ থেকে টাকা কম পাচার হয়না। এটা মোটেও ভাল কিছুনা। তাহলে কেন এই টপিক আনলাম? আনলাম একারনেজ যে টাকা পাচার হওয়া যে বুক উচিয়ে গর্ব করার বিষয় না এটুকু কমন সেন্স এসব পাব্লিকের মধ্যে নেই।
এই একি গ্রুপের পাব্লিক পাকিস্তান, ভারতের বিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট কে ফুলিয়ে ফাপিয়ে ট্রিলিয়ন ডলার প্রজেক্ট বলতেও বাধে না। এমনকি চীন, আমেরিকাকে তুলনা করে বসে। এদের এটুকু বুঝার সামর্থ নেই যে কিসের সাথে কি তুলনা দিতে হয়। আর এদের হাতেই গণতন্ত্রে ভোটের অধিকার।
এরা নিজেরা ট্যাক্স ফাকি দিবে কিন্তু বলে বেড়াবে ট্যাক্স দিয়ে উল্টায় ফেলতেছে। দেশে ট্যাক্স দেয় এরকম লোকের সংখ্যা ২০-২২ লাখ।
একথা এজন্য বলতেছি যে ইদানিং এই গণ মানুষের কমেন্ট দেখে বিরক্ত হচ্ছি। বিরক্তিটা হল একটা কমন কমেন্ট “মাথা পিছু ঋন ৬০০০০ টাকা, আমার টাকা গেল কই? আমিতো ঋন নেই নাই”। অথবা জন্মের পর ভ্যা ভ্যা করে কেদে উঠা মাছুম বাচ্চার ঘাড়েও ৬০০০০ টাকা ঋন। ” সরকার সব শেষ করে ফেলল। বাংলাদেশে মানুষ খেতে পায় না ঋন মারায়”
এই আবাল পাব্লিক গুলারে জিজ্ঞেস করে দেখবেন যে তিনি কি ঋনের একটি টাকাও দিয়েছেন? তার ঘাড়ে ৬০০০০ টাকা ঋন তাহলে সরকার তাকে গ্রেফতার কেন করেনি? তিনি তো ঋন শোধ করেন নি। যারা এসব মন্তব্য করে বেড়ান এদের অধিকাংশ টিয়াইএন ধারী না। এরা ট্যাক্স দেয় না। এরা মনে করে ভ্যাট দেয়াই ট্যাক্স দেয়া। এর বাইরে আর কিছু নেই।
ঋন কেন নেয়া হয়, কি কারনে এগুলা জিজ্ঞেস করবেন ভ্যা ভ্যা করে তাকায় থাকবে। কিচ্ছু জানে না।
যদি তাদেরকে বলেন যে ট্যাক্স তো ঠিক মত দেন না। তবে রাস্তা ঘাট, ব্রিজ এসব চান কেন? কেউ বলবে আমার রাস্তা ব্রিজ লাগবে না, আমার গণতন্ত্র লাগবে। আবার কেউ বলবে ওগুলা সব চুরির ধান্দা।
যদি কখনো জিজ্ঞেস করেন যে বাংলাদেশের মাথা প্রতি ঋন বিশ্বের সব থেকে কম কিছু দেশের মধ্যে আমরাও একটা। ভারত বা পাকিস্তানের ঋন আমাদের থেকে ৩*৪ গুন বেশি। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে নির্লজ্জের মত মিথ্যা আওড়াবে পাকিস্তান প্রতি বছর $৩৪ বিলিয়ন ডলার ঋন পরিশোধ করে। আমরা কত টাকা করি?
যদি বলেন যে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে জিডিপির অনুপাতে সব থেমে বেশি ঋন ছিল ১৯৯৪ সালে। তখনো বাংলাদেশ কোন ঋনের কিস্তি দিতে এক দিন বেশি সময় লাগায় নি। কিন্তু পাকিস্তান ১২ বার ঋনের কিস্তির টাকা দিতে ব্যার্থ হয়ে বেইল আউট প্যাকেজ নিছে। তখন বলবে এসব মিথ্যা কথা। আমাদের মাছুম মুসলিম ভাই।
এদেশের গণমাণুশের এসব বিভিন্ন দিক দেখে আমার বিশ্বাস উঠে গেছে। এরা দেশ নিয়ে ভাবে না। এরা ব্রিজ না থাকলেও গালি দিবে। ব্রিজ করে দিলেও গালি দিবে। ঢাকায় যানজট দেখে গালি দিতে থাকবে। এটা নিরসনে মেট্রোরেল করতে গেলে তখন আরো বেশি গালি দিবে। এরা নিজেরা ময়লা ডাস্টবিনে ফেলবে না। ইচ্ছা মত যেখানে খুশি ফেলবে। কিন্তু বর্ষায় পানি জমে গেলে তখন আবার নিজেই গালি দিবে।প্রশাসন কিছু দেখেনা। এরা নিজেদের দায়িত্ব নিজেরা পালন করবে না। সব কিছুকে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপায়ে বিরত্ব নিতে ব্যাস্ত। দেশ গোল্লায় যাক তাতেও যায় আসেনা। এদেশে ভোট বিক্রি হয়। কখনো এক কাপ চা এর বিনিময়ে। কখনো একটা লুঙ্গি উপহার নেবার বিনিময়ে। দেশের রাজা নির্বাচনেও একটা লুঙ্গির বিনিময়ে এরা নির্ধারন করে দেয় কে হবে রাজা। যাদের নূন্যতম বোঝার চেষ্টা নাই। দেশ নিয়ে ভাবনা নেই তারাই যদি গণতন্ত্রের মূল শক্তি হিসাবে কাজ করে তবে তাদের হাতে দেশ নিরাপদ?
আমাদের যেই জেনারেশন আসতেছে এর থেকে আমাদের অতিতের জেনারেশন হাজার গুন ভাল ছিল। ওদের ভেতর দেশপ্রেম ছিল। দেশের ভাল মন্দ বোঝার ক্ষমতা ছিল। পরিতাপের বিষয় আমরা সেটি হারায় ফেলতেছি।
এই অংশটুকু যুক্ত করলাম।
হিমেলের কমেন্ট”বাংলাদেশ এখন আর গনতন্ত্র ডিজার্ভ করেনা। একদল ক্ষমতায় গেলে অন্যদল পাছায় আঙ্গুল দেওয়ার ধান্দায় থাকে৷ যখন যে নির্বাচনে হারবে তখন সে অন্যকে পিছন থেকে টেনে ধরবে। আওয়ামিলীগ বিনপির বেশিরভাগ অনুসারী এক, একদলে ছাগল বেশি, আরেকদলে ছাগল কম। সুযোগ পেলে সবারই ল্যাঞ্জা বেরিয়ে যায়। কেও নাই যে বলবে, আপনি নেতা হিসেবে আমার চেয়ে ভালো, হেরেছি তো কি হইছে চলুন একসাথে কাজ করি। আর বর্তমান ইয়াং জেনারেশনকে কি বলবো! গনতন্ত্র এদের জন্য৷ না। দেশকে জঙ্গিমুক্ত করতে গেলে এরা নাটক বলে সিরিয়াস ঘটনাকে হালকা করে দেয়। এরা বিদ্যুৎ চায়। কিন্ত কয়লা দিয়েও তৈরি করতে পারবেনা, পরমানু বিদ্যুৎও তৈরি করতে পারবে। কোন প্রতিষ্ঠান করলে বলে শো অফ, খাওয়ার ধান্দা বলে বাধা দেয় এরাই আবার চাকরি করার জায়গা চায়।
ভিন্নকিছু কিংবা নতুন কিছু করতে গেলে কত বাহানা, অথচ এরাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চায়। এদেশের অধিকাংশ মানুষ কি চায় তাই স্পষ্ট না। এরা গনতন্ত্র চায়, কিন্ত গনতন্ত্র কি বুঝে? উন্নয়ন চায়না, গনতন্ত্র চায়৷ এদের একটা বিরাট অংশ আবার গনতন্ত্র কি বুঝেনা, ঐযে লোকে গনতন্ত্র চাই বলে তাদের সাথে সুর মিলায়। এরা প্রোপাগাণ্ডায় বিশ্বাসী। কোনকিছু জাজ করে নিজের সিদ্ধান্ত নেবার শক্তি নাই। ইন্দোনেশিয়ার স্যাটেলাইট দেখে বলে আমাদের নাই কেন, জনগনে টাকা দেয় স্যাটেলাইট পাঠায়না কেন, স্যাটেলাইট পাঠাইলে বলে প্রমান নাই, সব নাটক, আমাদের স্যাটেলাইট দরকার নাই, স্যাটেলাইটের নাম এটা কেন, মাথা শিবলিঙ্গের মত কেন, আমেরিকা থেকে পাঠাইছে কেন, নিয়ন্ত্রণ ফ্রান্সের হাতে কেন, স্যাটেলাইট হারায়া গেছে! কি অদ্ভুত, কি অসভ্য। এদের নিয়ে দেশ এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। পিছন থেকে টেনে ধরবেই।”

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...