একুশ শতকের ভয়াবহ মহামারী করোনা দানবের তাণ্ডব চলছে বিশ্বজুড়ে। লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যু-মিছিল চলছে। এসময়ে এতটুকু গাফিলতি, নজরদারির অভাব বিপদ বাড়াতে পারে। যার জ্বলন্ত প্রমাণ ভারতের রাজধানী দিল্লির ধর্মীয় সম্মেলনের ঘটনা। বলা যায় দেশে করোনা সংক্রমণের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে দিল্লি। এই পরিস্থিতিতে কী করে বিপুল সংখ্যক জমায়েতের মাধ্যমে নিজামুদ্দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন হল, তা নিয়ে ভারতেই উঠছে প্রশ্ন। চূড়ান্ত গাফিলতি ও নজরদারির অভাব যে এক্ষেত্রে ছিলই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিপদের এই দিনে দোষারোপ করে আকচা-আকচি করার সময় এটা নয়। তবে পর্যটক ভিসার শর্ত ভেঙে ওই ধর্মীয় সভায় যোগ দেওয়া বিদেশিদের উপর সরকারি নজরদারি যে যথেষ্ট ছিল না, তা স্পষ্ট। এর দায় অস্বীকার করতে পারে না দিল্লি প্রশাসন ও সেখানকার পুলিশ। দিল্লি পুলিশ আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। তাই এক্ষেত্রে শুধু ভর্ৎসনা যথেষ্ট নয়। দেশের এই জটিল পরিস্থিতিতে সতর্কতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে এমন মারাত্মক গাফিলতিকে অপরাধ হিসেবে ধরা হলে কি খুব ভুল হবে? এমন পরিস্থিতিতে যাঁরা জমায়েত বা সমাবেশ করছেন, তার উদ্দেশ্য ধর্মীয় হোক বা অন্য কিছু, তাঁদেরও ভাবা দরকার ওই দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ দেশের মানুষের বিপদ বাড়াবে। তাই এখন যে যার ধর্ম পালন করুন নিজ নিজ বাড়িতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। ভুলবেন না, আমাদের মূল ধর্ম কিন্তু মানবতা।
করোনার উৎপত্তি কোথায়, কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, আক্রান্ত কত, মৃত্যু-মিছিলে নতুন কত সংখ্যা যোগ হল—এসব তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে যত আলোচনা বিশ্লেষণ হচ্ছে, আমরা সত্যি কি ততটা সচেতনও থাকছি? এতদিনে মানুষ জেনে গিয়েছে, মাস্ক-স্যানিটাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি আর কী কী করণীয়। কী করলে করোনা সংক্রমণ ঠেকিয়ে মানুষ বাঁচতে পারে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ থেকে সরকার সব পক্ষই। এই ভাইরাসের সম্ভাব্য সংক্রমণ ঠেকাতে দিনরাত এক করে দিয়েছে সরকার, সেনাবাহিনী ও প্রশাসন। হয়েছে অঘোষিত লকডাউন। বারবার বলা হচ্ছে অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে না বেরতে। কারণ এটাই করোনা মোকাবিলার সর্বশ্রেষ্ঠ দাওয়াই। দুর্ভাগ্য যে, এখনও দেশের বেশ কিছু মানুষ বেপরোয়া। অপ্রয়োজনে তাঁরা ঘোরাঘুরি করছেন, আড্ডা জমাচ্ছেন আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অহেতুক গুজব রটিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তুলছেন। এসব বন্ধ হওয়া দরকার। প্রয়োজনে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। কারণ এই ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে কিছু মানুষের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত কিন্তু সবাইকেই করতে হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার ফল ভুগছে পশ্চিমার বেশ কয়েকটি দেশ। এই ভুল আমরা যেন না করি।
সরকারের বীজমন্ত্র একটাই। আপনি বাড়িতে থাকুন। সমস্যার মোকাবিলায় সরকার রয়েছে প্রহরীর মতো। মানুষের জীবনযাত্রায় শিথিলতা এলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। সরকার বা প্রশাসন নামক প্রবল ক্ষমতাশালীকেও কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে এই ভাইরাস। তাকে পাল্টা আক্রমণের মহৌষধি না থাকলেও মানুষকে বাঁচানোর যুদ্ধ শুরু হয়েছে এই দেশেও। সেই যুদ্ধে সেনাপতির ভূমিকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে প্রতিদিন নতুন নতুন ঘোষণা হচ্ছে। সবই হচ্ছে মানুষকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে। প্রায় একই ছবি গোটা দেশে। করোনা ধাক্কা দিয়েছে দেশের অর্থনীতিকে। অথচ, এই সমস্যার মোকাবিলায় প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। অভুক্ত মানুষের জন্য চাই ত্রাণ। এই কাজে সরকারকে সহযোগিতা করতে দায়িত্বশীল নাগরিকের একটা ভূমিকা থাকা উচিত। বিপদের ঝুঁকি এড়িয়ে ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা করতে হবে সরকারকে। আর বিলাসিতা ছেড়ে মানবিক হয়ে স্বচ্ছল নাগরিকদের সহযোগিতা করতে হবে সরকারের সঙ্গে।
দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, এখনও আমরা দ্বিতীয় স্টেজে রয়েছি। এর অর্থ, মারণ ভাইরাস থাবা বসিয়েছে স্থানীয়ভাবে। তবে দ্বিতীয় স্টেজেই থেমে থাকুক ভাইরাসের যাবতীয় জারিজুরি। তাই প্রশাসন কঠোর। আতস কাচের নীচের ছবিটা হল, সিংহভাগ জনতা অতি প্রয়োজন ছাড়া লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করছেন না। কিন্তু মুদ্রার উল্টোপিঠে সংখ্যা কম হলেও অন্য ছবি এখনও দেখা যাচ্ছে। বাজারে-দোকানে গায়ে গা লাগিয়ে কেনাবেচা, পাড়ার মোড়ে আড্ডা, সান্ধ্যভ্রমণ সবই চলছে। কেউ কেউ আবার যাচ্ছেন নিজ ধর্মস্থানে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার বলছে, সিংহভাগ জনতাও বলছে এসব বন্ধ করুন। মনে রাখুন, আপনার একটা ভুল, উপেক্ষা আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। সরকারের দেওয়া গাইডলাইন বাঁচাতে পারে মানুষকে। কিছু মানুষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য আমরা কি এই লড়াইয়ে হেরে যাব? তা কখনওই হতে দেওয়া যায় না। আমরা তা হতে দেবও না। শেষ পর্যন্ত আমরাই করব জয়।
লেখকঃ মোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment