বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন আওয়ামী লীগ দেশে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
শনিবার সকালে স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে চিকিতসা ও সেবা কমিটির এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে চিকিতসা ও সেবা কমিটির উদ্যোগে সারাদেশের মহানগরে একযোগে অনুষ্ঠিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এই কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হয়। রক্তদান কর্মসূচির পাশাপাশি ডাক্তারা রোগীদের চিকিতসাপত্র ও বিনামূল্যে ঔষধ সরবারহ করে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে সেজন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, আমরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছি, আমাদের ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়ে গেছেন, মা-বোনেরা সম্ভ্ম দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতা সেই গণতান্ত্রিক চেতনা সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধবংস করে দিয়ে আওয়ামী লীগ আজকে দেশে একটা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই ৫০ বছর পরে আমাদেরকে তাই আজকে শপথ নিতে হবে যে, আমাদেরকে এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, আমাদের এদেরকে সরাতে হবে।
এদের এখনকার লক্ষ্য একটাই- বাংলাদেশকে লুট করে নেওয়া। আমরা ছোট বেলা মায়েদের কাছে বিছানায় শুতে যাওয়ার আগে গান শুনতাম-ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে। এই বর্গীদের ভুমিকায় নেমেছে তারা।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্গীরা যেমন আপনারা লুট করে, বাংলাদেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যেতো, বাংলাদেশের কৃষককে লুট করে নিয়ে যেতো, সেইভাবে তারা আজ তারা সমস্ত বাংলাদেশকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে -সেই কানাডার বেগমপাড়ায় অথবা মালয়েশিয়াতে অথবা আমেরিকাতে-ফ্লোরিডাতে, ইংল্যান্ডে তারা বাড়ি-ঘর তৈরি করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই জনগনের বন্ধু ছিলো না। আমার দুঃখ হয় যে, তারা এক সময়ে পাকিস্তান আমলে আমরা দেখেছি আমাদের সঙ্গে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে।
আমাদের যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বসে আছেন তিনি একসময়ে ছাত্রলীগের বড় নেতা ছিলেন, ভিপি ছিলেন, তিনিও কিন্তু আওয়ামী লীগের স্বাধীনতার পরের যে ভুমিকা, সেই ভুমিকায় থেকে থাকতে পারেননি, তিনি বেরিয়ে এসেছেন।
স্বাধীনতার পরের থেকে আওয়ামী লীগের চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। তারা সেই গণতন্ত্রের মধ্যে আর তারা নিজেদের ধারণ করতে পারছে না।কারণ গণতন্ত্র হলে তো ক্ষমতা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, গণতন্ত্র হলে তো সবাইকে ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে, গণতন্ত্র মানলে তো ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে-এগুলোর মধ্যে তারা নাই।
তারাই মালিক, আমরা হচ্ছি সব প্রজা। তারা হচ্ছে প্রভু, আমি হচ্ছি দাস, সাধারণ মানুষ দাস। এভাবে গোটা বাংলাদেশকে তারা দেখে, বরাবরই দেখে এসছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আপনারা খুব ভালো করে জানেন, আওয়ামী লীগ সারাদে্শে যেভাবে ভয় দেখিয়ে, ত্রাস সৃষ্টি করে একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে যেখানে গণতন্ত্র চলতে পারছে না।
এই যে আমাদের চিকিতসক ভাইয়েরা আছেন- এতোটুকু গন্ধ আছে যাদের বিএনপির, ভিন্নমতের ভালো ভালো জায়গা থেকে সব বদলি, অনেকের চাকুরি চলে গেছে, অনেকে নিজেই বাধ্য হয়ে অবসরে চলে গে্ছেন।
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তারা সুপরিকল্পিতভাবে সচেতনভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রামে যাদের অবদান সেগুলোকে একেবারেই খাটো করে অথবা একেবারেই না বলে মাত্র একটি ইতিহাস তারা বলতে চেয়েছে তা হচ্ছে যে, এই পুরো স্বাধীনতার জন্য একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার, একটি গোষ্ঠি বা একটি রাজনৈতিক দলই একমাত্র কৃতিত্বের দাবিদার।
তিনি আরো বলেন, এটি সত্য নয়। এই কথা আমরা বার বার বলে আসছি এবং একটা অসত্য প্রমাণ করবার জন্যই আমরা ২ তারিখে ততকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা যারা স্বাধীনতার সংগ্রামের সামনের সারিতে ছিলেন, তারা যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীনতার পতকা উত্তোলন করেছিলেন এবং ২ তারিখে পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন সেই দিবস আমরা পালন করেছি।
আমরা ৭ মার্চ পালন করেছি। অনেকে এই দিবসটি পালন নিয়ে আমাদের ভুল বুঝার চেষ্টা করেছেন। আমরা কী বলেছি ৭ মার্চের। আমরা বলেছি যে ৭ মার্চের ভাষনে স্বাধীনতা আসে নাই। আমরা বলেছি যে, স্বাধীনতা একদিনে কোনো একটা ভাষনের ফলে যুদ্ধের পরিণত হয় নাই।
ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধ যে, যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্ত ও স্বাধীন হলাম এবং পরাজিত করলাম পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে।
যে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা সমগ্র জাতিকে একটা হতাশা থেকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রানিত করা হলো সেই মহান নেতা মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে আমরা তুলে আনতে চেয়েছি।
এটা বুঝতে হবে। একতরফা হয়ে থাকলে চলবে না, দলকানা হলে চলবে না। ইতিহাসকে ইতিহাস দিয়েই মূল্যায়ন করতে হবে এবং সেটাকে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
খালেদা জিয়াকে আটক করে রাখা, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ মামলা, নিপীড়ন-নির্যাতন প্রভৃতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আজকে সেই আওয়ামী লীগ দানবের মতো আমাদের ওপর চেপে বসে আছে।
‘আসুন, একাত্তর সালে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবার, বৈষ্যমহীন বাংলাদেশ তৈরি করবার, চিন্তার-কথা বলার স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠা করবার সেই বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আমরা শপথ গ্রহন করি।
স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমারা সারা বছর ব্যাপী স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী কর্মসূচি করে জনগনের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরব। আমাদের বার্তা? এই বার্তা যে, মুক্তিযুদ্ধের মূল ইতিহাস, সত্যিকার ইতিহাস।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশে শুধু একটি দল ক্ষমতায় ফ্যাসিস্ট কায়দা টিকে থাকার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে, স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করছে বর্তমান প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার জন্য। সেজন্য আমরা প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে চাই।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কি? অনেক স্বাধীনতার সংগ্রাম-আন্দোলন, স্বাধিকারের আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সাথে এক করে এই প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে চায়। কিন্তু একটি সংগ্রাম, একটি আন্দোলন আর একটি মুক্তিযুদ্ধ এক কথা নয়।
মুক্তিযুদ্ধ বা যেকোনো যুদ্ধ একটা সময়ে শুরু হয়, একটা সময়ে শেষ হয়, মুক্তিযুদ্ধ বা যেকোনো যুদ্ধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে যখন আক্রমন করা হয় বা প্রতিরোধ করা হয় অন্ত্রের সাহায্যে তখনই যুদ্ধ শুরু হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সেইভাবে শুরু হয়েছিলো। ২৫ শে মার্চের কালো রাত্রিতে পাকিস্তানি হায়েনার বাহিনী এদেশে গণহত্যা শুরু করেছে তথন কিন্তু রাজনীতিবিদদেরকে তাদের জনগনের পাশে দাঁড়াতে দেথা যায় নাই।
সেই রাত্রে চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন মেজর যিনি সাহসী এবং কি পরিমান দেশপ্রেমিক হলে তিনি সেই দিন তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ২৫ তারিখ শেষ রাতে ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে রিভোল্ট করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
একথা আমি যখন বলি যারা ইতিহাস বিকৃত করেন তারা এর পরিবর্তে বলেন দেখি আর একজনের নাম যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আরেকজন রিভোল্ট করেছে জিয়াউর রহমানের বাইরে আরেক জনের নাম বলতে পারেন কিনা। পারবেন না।
চিকিতসা ও সেবা কমিটির কমিটির সদস্য ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, ড্যাবের এমএ সেলিম, জহিরুল ইসলাম শাকিল,শহিদুল আলম, পারভেজ রেজা কাঁকন, সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, মেহেদি হাসান, সম্মলিত পেশাজীবী পরিষদের শামীমুর রহমান শামীম, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মতস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment