করোনাকালে এলপিজি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির যে প্রস্তাব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে দেয়া হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয় বরং মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সরকারি এবং বেসরকারি দুটো প্রস্তাবই অযৌক্তিক মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ সরকারের নিকট এলপি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের দাবী জানিয়েছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, করোনাকালে জনগণের দুরবস্থার মধ্যে যদি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হয় তাহলে দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে এলপিজির মূল্যবৃদ্ধি, উৎপাদন ব্যয়, এলপি গ্যাস লিমিটেডের লোকসান, বেসরকারি কোম্পানির এলপিজির মূল্যবৃদ্ধি প্রভৃতি বিবেচনায় এলপি গ্যাস লিমিটেড ১২ দশমিক ৫ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা বৃদ্ধির যে প্রস্তাব করেছে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
নেতৃদ্বয় বলেন, মাসে মাসে মূল্যবৃদ্ধির বিইআরসির প্রস্তাব আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। সম্প্রতি সংসদে আইন করে বছরে একাধিকবার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির যে সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে তাও এভাবে নিশ্চিতভাবে মাসে মাসে মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগকে সমর্থন করে না। তাই কমিশনের এধরনের চিন্তা পুন:বিবেচনা করা উচিত। আদালতের আদেশ পালন করা মানে এমন একটি সিদ্ধান্তে আসা নয়। এতে সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে। ফলে চিনি শিল্পের মতো পরিণতির দিকে যাবে। সরকারি চিনিকলগুলোতে চড়ামূল্যে চিনি উৎপাদিত হওয়ার পর তা আর বাজারে বিক্রি করা যায় না। এলপিজির ক্ষেত্রেও তাই হতে পারে।
তারা বলেন, রাষ্ট্রীয়খাতের উন্নয়ন না করে তাদের পণ্যের মূল্য এমন পর্যায়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে করে রাষ্ট্রীয় খাত ধ্বংস হয়, ব্যবসায়ীদের সুবিধা হয়। সরকারি কোম্পানির এলপিজির মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ না করে উল্টো হ্রাস করা প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় সুলভ মূল্যের গ্যাস সেনাবাহিনীকে দেওয়ার পর যা থাকে, তা পরিকল্পিতভাবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বণ্টন করা যেতে পারে।
নেতৃদ্বয় বলেন, জনগনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে সরকারি কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি করে ফান্ড করা যায় না। এটি অযৌক্তিক। কোম্পানি বাড়তি এই দামে সিলিন্ডার বিক্রি করতে পারবে কিনা, সেটি আগে বিবেচনায় নিতে হবে। বেসরকারি কোম্পানিগুলো হাইকোর্টের আদেশের পরও মূল্যবৃদ্ধি করেছে। সেই মূল্যের অর্থ আদায় করতে হবে। পাশাপাশি যেসব লাইসেন্সি কোম্পানি এই দাম বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামত মূল্য বৃদ্ধি করে বলেই ঠকছে গ্রাহক।