কমরেড শরীফ উল্যাহর জন্ম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায়। বাবা রুস্তম মিয়া ও মা আমেনা বেগম।
বিত্তশালী পরিবার থাকলেও সেটি কালক্রমে মধ্যবিত্তে রূপ নেয়। গ্রামে বেড়ে উঠা ও উড়ন্ত এক জীবন। ছয় ভাইবোনের মাঝে তিনি ছিলেন সবার ছোট। প্রাইমেরি শেষ করেই যখন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তী হন জড়িয়ে যান রাজনীতির সাথে। এর মাঝে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
মুক্তিযুদ্ধে ওনার গ্রাম – এলাকা তেমনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বয়স কম হলেও ইচ্ছাশক্তি থেকে অবদান রাখেন বিভিন্ন ভাবে। মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, সমরাস্ত্র সরবরাহ, বহন, ঔষধ সরবরাহ করেন। তখন তার বয়স অনেক কম বিধায় কেউ সাথে নিতে রাজী হয়নি। চন্দ্রগঞ্জ ব্রীজ যখন বোমা ফাটিয়ে ধ্বংস করা হয় তখন অবদান রাখেন। জানা যায় প্রথম বার সফল হয়না বোমা ফাটিয়ে ব্রীজের যোগাযোগ নষ্ট করে দেওয়া। পরে ওনারা সবাই আরো বড় মাপের বিষ্ফোরক ব্যবহার করেন। এক মাত্র ওই অপারেশনে অবদান নেওয়া শরীফ উল্যাহ ওইদিন সফল হন।
রাজনৈতিক জীবনে যুক্ত হোন প্রাচীন সংগঠন জাসদ এর রাজনীতিতে। স্বাধীনতা পরিবর্তী যখন জামায়াত চক্র আবার পরিপুষ্ট হয় তখন কফিল উদ্দিন কলেজে প্রায়শই হতো জামায়াত-শিবির আর জাসদের মাঝে ভয়াবহ মারামারি। জামায়াতের সাথে ছাত্রলীগের কিংবা জাসদের প্রতিদিনের সূচীর একটি অংশ ছিলো মারামারি। কখনো বা জাসদ-ছাত্রলীগ এক সাথে হয়ে শক্তি প্রদর্শন করতো। আবার কখনো একাই জামায়াত কে প্রতিরোধ কররো। এর এক পর্যায়ে একদিন ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবির এর সাথে ছাত্রলীগ-জাসদ জুটির হয়ে যায় রক্তাক্ত হাঙ্গামা। ওইদিন কমরেড শরীফ শিবিরের কর্মীদের হাতে রক্তাক্ত হন ও তার মাথায় মটর বাইকের চেইন দিয়ে আঘাত করা হয়। সে যন্ত্রনা বয়ে বেড়ান মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
জাসদ যখন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে দুইভাগ করা হয়, তখন বাসদে চলে আসেন কমরেড শরীফ। প্রোগ্রাম, অর্থ সংগ্রহ, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র সব মিলিয়ে সময় পার করতেন। বাসদের হেভিয়েট নেতায় পরিনত হন নিজ মেধা ও ইচ্ছাশক্তি দিয়ে। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম কিংবা কেন্দ্রীয় সভা গুলোতে নীতিগত সিদ্ধান্তের একজন হয়ে যান।
রাজনীতি, গ্রাম্য সেবাদান ও সাথে চলে ইনসুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করা। গ্রামের হতদরিদ্ররা যেখানে সামান্য রোগের জন্য ডাক্তার দেখাতে পারতো না সেখানে একটা কলম আর সাথে কাগজ নিয়ে চলে আসতেন কমরেড শরীফের কাছে। উনি ঔষধের নামের সাথে লিখে দিতেন নিজের স্বাক্ষর। এতে করে যেখান থেকে ঔষধ কেনা হতো তারা এই সাক্ষর দেখে টাকা কম নিতেন। এভাবে হাজার হাজার হতদরিদ্রের চিকিৎসা করেন।
কর্মজীবনে শিক্ষকতা করেন তারপর চিকিৎসা সেবা, ইনসুরেন্স ও করেন। নিজের সর্বোচ্ছ টা দিয়ে ভালোবাসতেন বাংলাদেশকে। অনেক গুলো বই পড়ার মাধ্যমে ইতিহাস সম্পর্কে অনেক জ্ঞান ছিল ওনার।
“আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে, তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে”। নিজেকে কাজী নজরুলের অনুসারী হিসেবে গঠন করেন। অনেক কবিতা লিখতেন ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অনুচ্ছেদ লিখতেন। বলতেন-
” কখনো যদি কোন দেশ কল্যানে একটি প্রাণের প্রয়োজন হয়, তবে সবার আগে আমি আমার প্রাণটি দিবো “।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, কর্নেল ওসমানী, হোসেন শহীদ সোরোয়ার্দী, মেজর খালিদ মোশারফ এর অনেক বড় ভক্ত ছিলেন। কার্ল মার্কস, লেলিন, স্তালিন, মাওসেতুন এর সম্পূর্ন জীবনি নিজের জ্ঞান ভান্ডারে সংযুক্ত করে নিয়েছিলেন। সর্বোশেষ কমরেড শিবদাস ঘোষের আদর্শে অনুপ্রানিত হন। শিবদাস ঘোষের সাথে দেখাও করেন এবং বর্তমান বুর্জুয়া নীতি ও বিপ্লব নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করেন।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই বিপ্লবি নিজ দেশকে ভালোবেসে গেছেন। জাতি, ধর্ম নিরপেক্ষতা মূখ্য ধরে সাহায্য করে গেছেন প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে। ২০১৬ এর ১৬ জানুয়ারী মহান বিপ্লবী কমরেড শরীফ উল্যাহ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার সময় যান। ওনার নিজ বাসভবনে পারিবারিক গোরস্থানে ওনাকে শায়িত করা করে বিদায় জানানো হয় ফুলেল বিপ্লবী শ্রদ্ধায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment