সম্প্রতি করোনা ভাইরাস আরও দুই থেকে তিন বছর থাকবে বলে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। তার ওই বক্তব্যকে কাণ্ডজ্ঞানহীন অভিহিত করে ক্ষোভ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (১৯ জুন) সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ক্ষোভের কথা জানান তিনি। আগামীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।
আবুল কালাম আজাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার যখন দিন-রাত পরিশ্রম করে মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত সাহস দিচ্ছেন। তখন করোনার আয়ুষ্কাল নিয়ে স্বাস্থ্যবিভাগের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য জনমনে হতাশা তৈরি করছে। আমি এ ধরনের সমন্বয়হীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য থেকে নিজেদের বিরত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। স্পর্শকাতর এ সময়ে দায়িত্বশীল পদে থেকে যে কারো দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়।
এদিন ব্রিফিংয়ে সম্প্রতি খুলনায় চিকিৎসক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা সংকটে ফ্রন্টলাইনে থাকা যোদ্ধাদের অনেকেই নিজেকে দেশ ও জাতির সেবায় উৎসর্গ করেছেন। এ পর্যন্ত ৪২ জন চিকিৎসক, ২৬ জন পুলিশসহ নার্স, টেকনিশিয়ান, সাংবাদিক, আনসার সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খুলনায় একজন চিকিৎসক হত্যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্খিত। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। সব সম্মুখযোদ্ধাকে আমি ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি। মনে করিয়ে দিতে চাই, শেখ হাসিনার সরকার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না। অন্যায়কারী যতই ক্ষমতাবান হোক, তার রেহাই নেই।
প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংক্রমণের বর্তমান পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে আবারো আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের আশার শেষ ঠিকানা চেতনার বাতিঘর শেখ হাসিনা দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করছেন। তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নেতাকর্মীরা অতীতের মতো সাহসী ও মানবিক ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্তের পরপরই দ্রুত এবং কার্যকরভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে সুসমন্বয়। সঠিক সমন্বয় সাধন সম্ভব হলে লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিবিড় মনিটরিং ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শক্তিশালী টিমওয়ার্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। যেসব এলাকায় লকডাউন করা হবে, সে সব এলাকার জনসাধারণকে গুরুত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।